নিজস্ব প্রতিবেদক: সদ্য প্রকাশিত পরীক্ষার ফল প্রত্যাখ্যান করে দ্রুত বিশেষ পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের একদল শিক্ষার্থী গতকাল বেলা ১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সেখানে বিক্ষোভ করেন। এতে নিউমার্কেট-আজিমপুর সড়ক ও আশপাশের এলাকায় যানজট হয়।
বিকালে সড়ক ছেড়ে যাওয়ার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মো. আলামিন বলেন, ‘শিক্ষকরা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, আগামীকাল সাত কলেজের অধ্যক্ষরা মিলে মিটিং করবেন। মিটিংয়ে আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত না এলে বৃহস্পতিবার সকালে আবারও আন্দোলনে নামব।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ২০১৯ সালের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেয়া হয় ২০২১ সালে, চার বছরের কোর্সে ছয় বছর সময় লেগেছে। তাদের দাবি, গত আগস্টে প্রকাশিত ফলে ইংরেজিসহ কয়েকটি বিষয়ে গণহারে শিক্ষার্থীদের ফেল করানো হয়েছে।
এর আগে খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে গত ২৯ আগস্ট নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন তারা। পরে সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার অকৃতকার্যদের বিশেষ পরীক্ষা নেয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা না করায় আবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানালেন ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলামিন।
তিনি বলেন, ‘ফল বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বিশেষ পরীক্ষা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও আমাদের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছে না। এমনিতেই আমাদের জীবনের দুই বছর সময় নষ্ট হয়েছে, ২০১৯ সালের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হয়েছে ২০২১ সালে। সেখানে গণহারে ফেল করানো হয়েছে। আমাদের আন্দোলনের ফলে বিশেষ পরীক্ষা নিতে রাজি হলেও তা আয়োজনে কোনো তৎপরতা দেখছি না।’
আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে বিশেষ পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা না এলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী স্বর্ণা সাহা বলেন, ‘আমরা আর সময় নষ্ট করতে পারব না। আমাদের কি কোনো ভবিষ্যৎ নাই? চার বছরের অনার্স করতে সময় লেগেছে ছয় বছর। শেষ সময়ে ফল বিপর্যয় হওয়ায় আরও পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত আমাদের অনার্স শেষ করার সুযোগ দেয়া হোক। অন্যথায় রাজপথেই থাকব আমরা।’
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানতে সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমিয়ে শিক্ষার মান বাড়াতে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এর পর থেকে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজের ভর্তি পরীক্ষা, পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত হচ্ছে।