অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (এএসডি) বা অটিজম হলো বিকাশগত সমস্যার একটি রূপ। স্নায়ুতন্ত্রের ত্রুটির কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়।
অটিজমে আক্রান্ত শিশু এক বছর বয়সেও নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয় না। এসব শিশু অন্য মানুষের অনুভূতি বুঝতে কিংবা নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে অসুবিধা বোধ করে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা তুলনামূলকভাবে বিলম্বে কথা বলতে শেখে। একটি শব্দ বা ছোট ছোট বাক্য বারবার বলতে থাকে। প্রশ্নের সঙ্গে সম্পর্কহীন উত্তর দেয়।
যা করতে হবে: গ্লুটিন (গম, যব, বার্লি প্রভৃতি) এবং কেজিন (দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার) খাদ্যতালিকায় রাখা যাবে না। এসব খাবার অটিজমে আক্রান্ত শিশুর ত্রুটিপূর্ণ পাচন, শোষণ ও বিপাক ঘটায়। এতে শিশুর মধ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকে। এতে শিশুর অস্থিরতা বেড়ে যায়। তাই খাবারে সরাসরি চিনি বা মিষ্টি না দেয়াই ভালো।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুর থাইরক্সিন হরমোনের নিঃসরণ কম থাকতে পারে। এজন্য সামুদ্রিক মাছ ও আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ানো দরকার।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুর খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এ (কডলিভার অয়েল, ছোট মাছ, গাজর, পাকা পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো, কলিজা, ডিম, পালংশাক, পাকা আম প্রভৃতি) রাখতে হবে। এতে শিশুর দৃষ্টিশক্তি ও একাগ্রতা বাড়বে। পাশাপাশি নিয়মিত ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়াম খাওয়ালে শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়বে।
শিশুর খাওয়ার বিষয়টি নিয়মিত ডায়েরিতে লিখে রাখুন। যেদিন সে খুব বেশি অস্থির আচরণ করবে, সেদিন নতুন কোনো খাবার খেয়েছ কি না বা কোনো খাবার পরিমাণে বেশি খেয়েছে কি না, তা লিখে রাখুন। এক দিন পরপর শিশুকে পুরো একটি ডিম খেতে দিন। এ সময় শিশু স্বাভাবিকভাবে খেতে চাইলে প্রতিদিন ডিম খেতে দিন।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চকলেট, চিপস ও ভাজাপোড়া খাবার খেতে দেয়া যাবে না। সয়া সস, ইস্ট ও টেস্টিং সল্টযুক্ত খাবার শিশুর অস্থিরতা বাড়াতে পারে।
শিশুর শরীরে সিসা, ক্রোমিয়াম, ল্যাকটেট অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করাতে হবে। সংকট থাকলে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। এগুলোর সঙ্গে শিশুর অস্থিরতা ও আচরণের সম্পর্ক রয়েছে।
ইসরাত জাহান
পুষ্টিবিদ, সাজেদা হাসপাতাল, ঢাকা