বিশ্বজুড়ে বাতিল চার হাজার ৫০০ ফ্লাইট

শেয়ার বিজ ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরা কভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে গতকাল শনিবার খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন উদ্যাপন করেছেন। যে কয়েকটি দেশে কভিডের নতুন ধরন ওমিক্রনে তুলনামূলক কম আক্রান্ত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ড একটি। তবু দেশটির অনেক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

একই সময় বড়দিনের আগে বিশ্বে চার হাজার পাঁচশোর বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব ফ্লাইটের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক হাজার ফ্লাইট রয়েছে। খবর দি ওয়াশিংটন পোস্ট।

ওমিক্রনের কারণে পর্যটকরা যেন আক্রান্ত না হন ও রোগটি যেন ছড়িয়ে না পরে তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনেক উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ফ্লাইটঅ্যাওয়ার ডট কমের তথ্য অনুযায়ী, বড়দিনে কমপক্ষে দুই হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর আগের দিন প্রায় দুই হাজার ৪০০ ফ্লাইট বাতিল হয়। বিলম্বিত হয় প্রায় ১১ হাজার ফ্লাইট। ফ্লাইটঅ্যাওয়ার জানিয়েছে, আজ রোববার ছয়শোর বেশি ফ্লাইট বাতিল হতে পারে।

লুফথানসা, ডেল্টা, ইউনাইটেড এয়ালাইনসসহ কয়েকটি বিমান পরিবহন সংস্থার পাইলট, ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও অন্য কর্মচারীরা ওমিক্রনের কারণে হয় অসুস্থ, নতুবা কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ইউনাইটেড এয়ারলাইনস স্থানীয় সময় গত শুক্রবার চার হাজার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের মধ্যে ১৭৬টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। গতকাল ৪৪টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে এই এয়ারলাইনস। সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওমিক্রনের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে আমাদের ফ্লাইট ক্রু ও অন্য কর্মকর্তাদের ওপর। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আরেকটি খ্যাতনামা এয়ারলাইনস ডেল্টা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গত শুক্রবার তিন হাজার ১০০ ফ্লাইটের মধ্যে ১৫৮টি বাতিল করা হয়। এক সপ্তাহে আবহাওয়া ও ওমিক্রনের সংক্রমণের কারণে দেড় শতাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এদিন অবশ্য তিন হাজার ১০০ ফ্লাইটের সময়সূচি নির্ধারিত ছিল।

আলাস্কা এয়ারলাইনস স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার ১৭টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। আমেরিকান এয়ারলাইনসের মুখপাত্র ডেরেক ওয়ালস জানান, তাদের প্রতিষ্ঠান এর আগে কখনও এত ফ্লাইট বাতিল করেনি।

কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ফ্লাইট বাতিল করায় দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক লাখ যাত্রী। এলিজাবেথ হর্টন নামে যুক্তরাষ্ট্রের নর্দার্ন ভার্জিনিয়ার একজন যাত্রী মিসৌরি যাওয়ার জন্য উড়োজাহাজের টিকিট কেটেছিলেন। তিনি ডিসেম্বরের শুরুতে টিকিট কেটেছিলেন কিন্তু বিমানবন্দরে এসে জানতে পারেন তার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সবাই টিকার বুস্টার ডোজ নিয়েছি। কিন্তু উড়োজাহাজের এমন সিদ্ধান্তে আমাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেল। এখন জুমে ক্রিসমাস উদ্যাপন করতে হবে।

ফ্লাইট বাতিলের কারণে মিনেপোলিসের সেন্ট পল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাদুর, কম্বল, বালিশ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন যাত্রীরা। আটলান্টা বিমানবন্দরে টার্মিনাল হেল্প ডেস্কে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় যাত্রীদের। এসব কারণে অনেক যাত্রী নতুন করে ফ্লাইট বুকিং দিচ্ছেন। অনেক যাত্রী এয়ারলাইনসের এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

এদিকে ফ্লাইট বাতিলের শীর্ষে রয়েছে লুফথানসা। তাদের প্রায় ৩৩ হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। জার্মানির বৃহত্তম ও ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ বিমান সংস্থা লুফথানসা। মূলত যাত্রীর অভাবে তারা ফ্লাইটগুলো বাতিল করেছে। ওমিক্রনের কারণে লুফথানসার যাত্রী কমেছে। তাছাড়া তাদের অনেক পাইলট অসুস্থ হয়ে পড়ায় এমনটা হয়েছে। তবে লুফথানসার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কার্সটেন শোফার জানান, আগামী বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত যাত্রী নেই, চাহিদা একেবারে কমে গেছে। তাই তারা বহু ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। এর আগে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজও যাত্রী না থাকায় ফ্লাইট বাতিল করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি সতর্ক হতে সব যাত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, টিকা নিলেও বড়দিনের ছুটিতে বেড়াতে গেলে ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০