শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে নতুন কোনো সংকট তৈরি হয়নি। কিন্তু অশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহে অস্থিরতা কমার ইঙ্গিত মেলেনি। বরং অনিশ্চয়তার জেরে বিশ্ববাজারে টানা তিন দিন ঊর্ধ্বমুখী তেলের দর। গতকাল শুক্রবার ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৭৩ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছায়। সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির হার গত ছয় সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। খবর রয়টার্স।
তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক ও তাদের সহযোগী দেশগুলোর জুন পর্যন্ত উৎপাদন ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে ইতোমধ্যেই চলতি বছরে তেলের দর ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এর উপরে ইরানের তেল আমদানিতে ভারতসহ আট দেশকে দেওয়া ছাড় তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি সৌদি আরবের দুটি তেলবাহী জাহাজ ও দুটি পাম্পিং স্টেশনে ড্রোন হামলার জেরে পাইপলাইন সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়েছিল সৌদি অ্যারামকোকে। অপর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রর তেলের মজুত ভাণ্ডার ২০১৭ সালের পরে এখন সর্বোচ্চ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পশ্চিম এশিয়ার অস্থিরতা সেই বাড়তি জোগানকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরদের আশঙ্কা, তেলের যে দর ব্যারেল প্রতি ৭০-৭৩ ডলারের ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে, অনিশ্চয়তার জেরে তার ঊর্ধ্বসীমাকেও অদূর ভবিষ্যতে ছাড়াতে পারে। কারণ জোগান কমার পাশাপাশি এ বছরে বিশ্বে তেলের চাহিদাও বাড়বে বলে গত মঙ্গলবার ইঙ্গিত দিয়েছে ওপেক। গতকাল তেলের আগাম লেনদেনের দরও বেড়েছে।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে তেল সরবরাহ বেশ খানিকটা কমে গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা আইইএ। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ আরও শক্তিশালী করা এতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমঝোতার আলোকে ওপেকভুক্ত দেশগুলো তেল উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া ও ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক অচলাবস্থা এতে ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্ব জ্বালানি তেলের বাজারের ওপর আইইএ’র সর্বশেষ মাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভূরাজনীতি এবং অন্যান্য বাধার কারণে তেলের বাজার কঠিন সময় পার করছে। এর ফলে বাজার ভারসাম্য উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতির দিকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর তেলের দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনা সফল হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
বিশ্ববাজারের এ চিত্র উৎকণ্ঠায় রাখছে ভারতকেও। পূর্ব অভিজ্ঞতার নিরিখে অনেকের আশঙ্কা, ভোটের পর দেশটিতেও দর বাড়বে। ভারতে মাঝে কয়েক দিন পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমলেও, গত বৃহস্পতিবার ডিজেলের দাম সামান্য বেড়েছে। গতকাল আবার পেট্রোল কমলেও, ডিজেল ফের সামান্য বেড়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার না-মানলেও বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ভোটের সময় মানুষের ক্ষোভ এড়াতে দাম কমাতে পরোক্ষে তেল কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্নাটকসহ আগের কয়েকটি ভোটের সময়েও দাম বাড়েনি। কিন্তু ভোট শেষ হলেই তা আবার বেড়েছে। এবার কী হয়, সেটাই এখন দেখার।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম নিয়ে শঙ্কা কাটছে না
