নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বব্যাংকের পিছুটান সত্ত্বেও বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করায় বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিকে এখন তাদের ঋণ কার্যক্রম নিয়ে ভাবতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে নাড়া দিয়েছে। বিশ্বব্যাংককে তাদের বৈশ্বিক লেন্ডিং সিস্টেম নিয়ে আবার ভাবতে হবে। গতকাল ‘শেখ হাসিনার পদ্মা সেতু নির্মাণ: বিশ্ব ব্যবস্থায় বাংলাদেশ তথা উন্নয়নশীল দেশসমূহের এক যুগান্তকারী বিজয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন স্পিকার। ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে এ সেমিনার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপকমিটি।
স্পিকার বলেন, পদ্মা সেতু দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। আজ আর স্বপ্ন নয়Ñআজ বাংলাদেশের বাস্তবতা, আমাদের অহংকার, বাঙালির আত্মনির্ভরতার এক অনন্য উদাহরণ, অতুলনীয় নিদর্শন। চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে নিজস্ব অর্থায়নে শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করেছেন।
পদ্মা সেতু কেবল ইট-পাথরের নির্মিত সেতু নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে লাখো কোটি বাঙালির আবেগ; আমাদের ভালোবাসা, আমাদের গৌরব। দেশের মানুষ সেদিন শক্তি জুগিয়েছিল; কারণ মানুষের শক্তিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন। আমরা আজ আমাদের সক্ষমতাকে উদ্যাপন করছি।
আবারও প্রমাণিত হয়েছে, বাঙালি জাতি যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, আমরা পারি। পদ্মা সেতু আমাদের বিজয়ের প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক, আমাদের হার না মানার প্রতীক, আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। নিজের পরিবারে পদ্মা সেতু নিয়ে আলোচনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সর্বত্র। বাড়িতেও আলোচনা। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে আলোচনা হয়।
পদ্মা নদীর বুকে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের বৃহৎ এই অবকাঠামো আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান ঘিরে পদ্মার দুই পাড়েই নেয়া হয়েছে নানা আয়োজন।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, অনেকে বলছেন, অনেক টাকা লেগে গেল। মূল্যস্ফীতিÑ১০ হাজার ১০০ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি ধরলে ২৪ হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়। নদীর শাসন ১৪ কিলোমিটার হলো। সেখানে টাকা গেল। পিয়ার গভীরে গেল। অতিরিক্ত কোনো ব্যয় হয়নি। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন না করার পেছনে আর্থিক কারণ নয়, বরং ষড়যন্ত্র ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
