Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 6:55 pm

বিশ্ববাজারে বাড়বে পণ্যের দাম

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্ববাজারে গত বছরের চেয়ে এ বছর পণ্যের দাম বেড়েছে। আগামী বছর দাম আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ব্যাংকটির প্রকাশিত ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক, অক্টোবর-১৭’ প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রতি তিন মাস পরপর পণ্যবাজার নিয়ে পূর্বাভাস দেয় বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনমতে, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লাসহ জ্বালানি পণ্যের দাম চলতি ২০১৭ সালে আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ২৮ শতাংশ। আগামী বছর আরও চার শতাংশ দাম বাড়তে পারে এসব পণ্যের। চলতি বছর খাদ্যপণ্য, কাঁচা পণ্যসহ কৃষিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে আগামী বছর এসব সামান্য বাড়তে পারে। ধাতব পণ্যের মূল্য এ বছর ২২ শতাংশ বেড়েছে এবং আগামী বছর এর মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। অবশ্য স্বর্ণের দাম কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

গত বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গড় দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৪৩ ডলার। ২০১৭ সালে তা ৫৩ ডলার হতে পারে বলে আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। সর্বশেষ প্রতিবেদনে সংস্থাটি মনে করছে, ২০১৮ সালে গড় দাম হতে পারে ৫৬ ডলার। বর্তমানে এর গড় দাম ৫২ থেকে ৫৩ ডলার।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে স্থির গতিতে হলেও তেলের চাহিদা বৃদ্ধি, যুক্তরাষ্ট্রের শেল অয়েলের উৎপাদন কমানোর প্রতিশ্রæতি ও তেল রফতানিকারকদের উৎপাদন সীমিত করার পদক্ষেপ তেলের দর বাড়িয়ে দিচ্ছে। তেল ছাড়া আগামী বছর গ্যাসের দাম তিন শতাংশ এবং কয়লার দামও বাড়তে পারে। কয়লার দাম চলতি বছর বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। চীনে পরিবেশনীতিতে কয়লার ব্যবহার হ্রাস পণ্যটির দাম বৃদ্ধির পূর্বাভাসের অন্যতম কারণ।

বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জন বাফেস বলেন, তেজি চাহিদা ও মজুদ কমে যাওয়ায় জ্বালানির মূল্য বাড়ছে। তবে উৎপাদক দেশগুলো উৎপাদন কমানোর সময় বাড়ায় কি না তার ওপর আগামীতে এর দামের বিষয়টি বহুলাংশে নির্ভর করবে।

বিশ্বব্যাংক গত এপ্রিলের প্রতিবেদনে ২০১৮ সালে তেলের দামের যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, বর্তমান প্রতিবেদনে তা থেকে কিছুটা কমিয়েছে। আগের প্রতিবেদনে তেলের মূল্য ২০১৮ সালে গড়ে ৬০ ডলার হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। সংস্থাটি অবশ্য ধারণা করছে, জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের সদস্যরা উৎপাদন কম রাখার ব্যাপারে আবারও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে এবং তাহলে এর দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে।

লোহার দাম আগামী বছর ১০ শতাংশ কমবে, এ কথা বলা হলেও সিসা, নিকেল ও দস্তার সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়তে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। ধাতব পণ্যের মূল্যও নির্ভর করবে চীনের পরিস্থিতির ওপর। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার বৃদ্ধির প্রত্যাশা বাড়ায় আগামী বছর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ব্যাংকটি।

আগামী বছর সার্বিকভাবে কৃষিপণ্যের দাম সামান্য বাড়তে পারে। তবে খাদ্যশস্যে উৎপাদন কম হলেও চালসহ কিছু শস্যের ভালো মজুদ থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিশ্বে চালের উৎপাদন ৩০ লাখ টন কমে ৪৮ কোটি ৯০ লাখ টন হবে। এর কারণ চীন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে উৎপাদন কিছুটা কম হবে। তবে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে উৎপাদন বাড়বে। চালের দামও কিছুটা বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা না থাকলেও এতে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও আমদানিকেন্দ্রিক পরিসংখ্যান রয়েছে। এতে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশে চালের উৎপাদন ১৬ লাখ টন কমে তিন কোটি ৩০ লাখ টন হতে পারে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চালের উৎপাদন ছিল তিন কোটি ৪৬ লাখ টন। উৎপাদন ঘাটতির কারণে চালের আমদানি বাড়বে। বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে চাল আমদানি বেড়ে ১৭ লাখ টন হবে। গমের আমদানিও বাড়বে। গত অর্থবছরে ৫৬ লাখ টন গম আমদানি হয়। এবার হতে পারে ৬৫ লাখ টন।