Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:43 pm

বিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে দামি কোম্পানি এনভিডিয়া

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের চিপনির্মাতা এনভিডিয়া। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে (এআই) যে উন্নত মানের প্রসেসর প্রয়োজন হয়, তা তৈরির প্রতিযোগিতায় এগিয়ে কোম্পানিটি। এ কারণে মাইক্রোসফটকে হটিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তকমা পেয়েছে এনভিডিয়া। খবর: রয়টার্স।

গত মঙ্গলবার এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৩৫ দশমিক ৫৮ ডলারে উঠে যায়। এদিন বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় তিন লাখ ৩৫ হাজার কোটি ডলারে। বর্তমানে এর চেয়ে বেশি বাজার মূলধন কোনো কোম্পানির নেই। কয়েক দিন আগে অ্যাপলকে হটিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক বাজার মূলধনসম্পন্ন কোম্পানির তকমা পায় এনভিডিয়া। এর কয়েক দিনের মধ্যে তারা শীর্ষ কোম্পানি হয়ে উঠল।

মঙ্গলবার মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ হ্রাস পায়। কোম্পানিটির বাজার মূলধন কমে ৩ দশমিক ৩১৭ টিলিয়ন বা ৩ লাখ ৩১ কোটি ডলারে নেমে আসে। একই দিন অ্যাপলের শেয়ারমূল্য এক শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়ে ৩ দশমিক ২৮৬ ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ ২৮ হাজার কোটি ডলারে নেমে আসে।

এক বছর ধরে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বাড়ছে। কোম্পানিটির স্টকমূল্যের এই বৃদ্ধি দেখে বোঝা যাচ্ছে, ওয়ালস্ট্রিটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে উš§াদনা তৈরি হয়েছে।

এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসডাক সূচক রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গেছে। তবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। এআই নিয়ে যে অসংযত উচ্চাশা তৈরি হয়েছে, সেই উচ্চাশা যেকোনো সময় হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগ কমে যাচ্ছেÑএমন ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র তেমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম যেমন বেড়েছে, একই সঙ্গে তাদের শেয়ার এখন যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হচ্ছে। প্রতিদিন এই কোম্পানির গড়ে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের বেশি শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, যেখানে অ্যাপল, মাইক্রোসফট ও টেসলার শেয়ারের লেনদেন হচ্ছে গড়ে এক হাজার কোটি ডলারের। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকে এখন যত শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, তার ১৬ শতাংশই এখন এনভিডিয়ার।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় প্রয়োজন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর। এর মূল উৎস এনভিডিয়া। ফলে চলতি বছর এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম প্রায় তিনগুণ হয়েছে। এখন এনভিডিয়ার প্রতিটি শেয়ারকে ১০ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শেয়ারের মূল্যমানে পরিবর্তন আসবে না, তবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এনভিডিয়ার শেয়ার কিনতে পারবেন। একই সময়ে মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো।

মাইক্রোসফট, মেটা ও অ্যালফাবেটের মতো মহিরুহ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক কম্পিউটিং সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক সেবা ও পণ্য নিয়ে আসছে। এসব ক্ষেত্রেই ব্যবহƒত হচ্ছে এনভিডিয়ার প্রসেসর।

এছাড়া প্রসেসরের জগতে আরও কিছু কোম্পানি রয়েছে। তবে এনভিডিয়ার প্রসেসরের মান অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে ভালো। সে কারণে তারা প্রসেসর সরবরাহ করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। অনেক বিনিয়োগকারী মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে যে প্রতিযোগিতা চলছে, তা থেকে সবচেয়ে লাভবান হচ্ছে এনভিডিয়া। মঙ্গলবার এনভিডিয়ার এই শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কোম্পানিটির স্টক মূল্য রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে ১১০ বিলিয়ন বা ১১ হাজার কোটি ডলার।

গত ফেব্রুয়ারিতে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। এক লাখ কোটি ডলার থেকে দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র ৯ মাস।  সেখান থেকে তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র তিন মাসের বেশি কিছু সময়।

এনভিডিয়ার নির্বাহীরা বলছেন, আগামী বছরের প্রথম ভাগ পর্যন্ত তাদের ব্ল্যাকওয়েল এআই চিপের সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি থাকবে।