শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীন ২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ১ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার ধার দিয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব উইলিয়াম অ্যান্ড মেরির গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইডডেটা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৩ সালে শুরু হওয়া বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় চীনের পাওনার পরিমাণ এখন এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি, যা দেশটিকে বিশ্বে সবচেয়ে বড় ঋণ সংগ্রাহকে পরিণত করেছে। খবর: ডয়চে ভেলে।
মোট ঋণের প্রায় ৮০ শতাংশ আর্থিক সংকটে থাকা বিভিন্ন দেশ পেয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় এইডডেটা।
চীন বলছে, দেড়শর বেশি দেশ বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় সেতু, বন্দর, মহাসড়কসহ নানা অবকাঠামো তৈরিতে ঋণ দিয়েছে চীন। ১৬৫টির বেশি দেশে প্রায় ২১ হাজার প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের খবর পেয়েছে এইডডেটা।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৬ সালে প্রায় ১৩৬ বিলিয়ন বা ১৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল চীন। ২০২১ সালে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের বিভিন্ন দেশকে ঋণ ও সহায়তা হিসেবে প্রায় ৮০ বিলিয়ন আট হাজার ডলার দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল।
এই বিপুল পরিমাণ ঋণ সহায়তা দেয়ার কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের মিত্র হয়ে উঠেছে। তবে একই সময়ে পশ্চিমা বিশ্বসহ শ্রীলঙ্কা, জাম্বিয়ার মতো ঋণগ্রহীতা কিছু দেশ সমালোচনাও করেছে। তাদের দাবি, চীনের অর্থায়ন বিভিন্ন দেশের ওপর এমন ঋণের বোঝা চাপিয়েছে, যা তারা পরিশোধ করতে সক্ষম নয়।
এইডডেটার গবেষকরা বলছেন, চীনের ঋণ দেয়ার পরিমাণ যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রকল্প বাস্তবায়ন স্থগিত, এমনকি বাতিল হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও বেড়েছে। সে কারণে ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে বেইজিং চিন্তিত হয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাই ঝুঁকি কমাতে চীনের নীতিনির্ধারকরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। এর মধ্যে একটিÑঅবকাঠামো খাতে দেয়া ঋণের পরিমাণ কমিয়ে জরুরি সহায়তা হিসেবে ঋণ দেয়ার পরিমাণ বাড়ানো। সে কারণে ২০১৫ সালে মোট ঋণের ৬০ শতাংশের বেশি অবকাঠামো খাতে দেয়া হলেও ২০২১ সালে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে আসে।
দুই বছর পর ২০১৮ সালের চীনের দেয়া মোট ঋণের ৩১ শতাংশ পেয়েছিল আফ্রিকা। ২০২১ সালে সেটি ১২ শতাংশে নেমে যায়। ২০২১ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে দেয়া চীনের ঋণের পরিমাণ চারগুণ বেড়েছে, যা এখন মোট ঋণের ২৩ শতাংশ।