রুবাইয়াত রিক্তা : চীনসহ বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ফেব্রুয়ারি মাসে এসব দেশে পণ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে ভয়াবহ দরপতন হয়। ২০০৮ সালে আর্থিক দুর্ঘটনার পরে গত সপ্তাহের সাতদিনই ছিল বিশ্ব পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়কাল। গত সপ্তাহে বিশ্ব পুঁজিবাজারের ১১ শতাংশ পতন হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারেও। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক দেশেরই বিশেষ করে চীনের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। ফলে দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের হুমকিতে রয়েছে। যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে পুঁজিবাজারেও। টানা সাত কার্যদিবস ধরে পতনে রয়েছে দেশের পুঁজিবাজারও। এই সাত কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৩৪৮ পয়েন্ট। লেনদেন ৮০০ কোটি টাকার ঘর থেকে ৪০০ কোটির ঘরে নেমে এসেছে। সাত দিনে বাজার মূলধন উধাও হয়েছে ২১ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। গতকাল মাত্র ১৩ শতাংশ বা ৪৬টি কোম্পানির দর বেড়েছে।
২০ শতাংশ বা ৯০ কোটি টাকা লেনদেন হয়ে শীর্ষে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাত। এ খাতে মাত্র পাঁচটি কোম্পানির দর বেড়েছে। ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের ১১ কোটি ১৩ লাখ টাকা লেনদেনের পাশাপাশি দর বেড়েছে ৪০ পয়সা। স্কয়ার ফার্মার ১১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, দর কমেছে ১০ পয়সা। ওরিয়ন ইনফিউশনের ৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে তিন টাকা ২০ পয়সা। ওরিয়ন ফার্মার ৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়, দরপতন হয় এক টাকা ২০ পয়সা। সেন্ট্রাল ফার্মার আট কোটি ৭৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দরপতন হয় ৬০ পয়সা। পাঁচ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে বি ক্যাটেগরির সেন্ট্রাল ফার্মা দরবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। মাত্র এক শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া এবং উৎপাদন বন্ধ থাকা শেয়ারটির দর কেন বাড়ছে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আবার মাত্র এক শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া কাগজ ও মুদ্রণ খাতের কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। কারা এসব শেয়ারের দর বাড়াচ্ছে, সেটা খুঁজে বেরা করা ডিএসইর পক্ষে খুব কঠিন না হলেও তারা কেন এটা বের করছে না সেটা নিয়েও বিনিয়োগকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন। বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয় ১৫ শতাংশ করে। বস্ত্র খাতে মাত্র সাতটি কোম্পানির দর বেড়েছে। পাঁচ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে সিমটেক্স দরবৃদ্ধিতে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসে। ১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়ে ভিএফএস থ্রেড ডায়িং লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে। দর বেড়েছে ২০ পয়সা। প্রকৌশল খাতে মাত্র একটি কোম্পানির দর বেড়েছে। ওয়েস্টার্ন মেরিনের সাড়ে ৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দরপতন হয় দেড় টাকা। গতকাল বীমা দিবসেও বিমা খাত ভালো অবস্থানে উঠতে পারেনি। দর বেড়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ বা সাতটি কোম্পানির। দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশে অবস্থান করে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স। বড় পতনের পর গতকাল ব্র্যাক ব্যাংকের দর সাড়ে চার শতাংশ বেড়েছে।