শেয়ার বিজ ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকায় কভিডের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হওয়ায় বিশ্ব পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ফলে গতকাল বিশ্ব পুঁজিবাজারে সূচক ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করায় কমছে জ্বালানি তেলের দামও। খবর: রয়টার্স, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় কভিডের একটি নতুন ধরনের খোঁজ মিলেছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, কভিডের ‘বি.১.১.৫২৯’ নামক এ ধরনে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন। এ ধরনে বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৫৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সবাই দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা ও হংকংয়ের বাসিন্দা।
নতুন এ ধরন নিয়ে বিজ্ঞানীরা চিন্তিত। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ভাইরাসের নতুন রূপ নিয়ে তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। এছাড়া বিদ্যমান করোনা টিকা ভাইরাসের এ ধরনকে কতটা থামাতে পারবে সেটি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা এ ধরনকে ‘এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমনকি এ ধরন মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর পরই গতকাল বিশ্ব পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা যায়। ফলে বিনিয়োগ হ্রাস করছেন তারা। এর জেরে গতকাল এশিয়ান পুঁজিবাজার সূচক দুই শতাংশের বেশি পড়ে যায়। অন্যদিকে ইউরোপের পুঁজিবাজারও দিনের শুরুতে এক শতাংশের বেশি পড়ে যায়। সার্বিকভাবে কভিডের নতুন ধরন বিশ্ব পুঁজিবাজারে ব্যাপক নেতিবাচাক প্রভাব ফেলেছে। কমেছে তেলের দামও।
এশিয়ান পুঁজিবার বিশ্লেষণে দেখা যায়, কভিডের নতুন ধরনের খবরে গতকাল দ্রুতই পড়ে যায় মার্কেট। জাপানের বাইরে এমএসনিআই’স সূচক দুই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা গত আগস্ট মাস থেকে সবচেয়ে বড় ধরনের সূচক হ্রাস।
আর জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক হ্রাস পেয়েছে প্রায় তিন শতাংশ। কয়েকটি দেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে বিমানপথ বন্ধ ঘোষণা করায় সবচেয়ে বেশি পড়েছে জাপানের বিমান কোম্পানির শেয়ারের সূচক। জাপান এয়ারলাইনের সূচক পড়েছে সাড়ে ছয় শতাংশ।
এ বিষয়ে সিএমসি মার্কিসের প্রধান বাজার বিশ্লেষক মাইকেল হিউসেন বলেন, কভিডের নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ায় এশিয়া-প্যাসিফিক মার্কেটে ‘অনেক বিক্রি বন্ধ’ হয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারের কয়েকটি সূচক বন্ধ থাকায় বড় প্রভাব পড়েছে এশিয়ার পুঁজিবাজারে।
মুদ্রাবাজার: এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণে যুক্তরাজ্য ও ইসরাইলসহ কয়েকটি দেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারেও ব্যাপক দরপতন হয়েছে। ডলারের বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুদ্রা র্যান্ডের দাম এক দশমিক সাত শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা পর্যটন চালুর পর থেকে গত এক বছরের সবচেয়ে দুর্বল মান। অন্যদিকে মেক্সিকান মুদ্রা পেসো এবং তুর্কি লিরার মান কমেছে এক দশমিক চার শতাংশ। কমেছে জাপানি মুদ্রা ইয়েনের মানও।
পণ্যবাজার: এদিকে কভিডের নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার প্রভাবে আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্কে জ্বালানি তেলের দামে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারেও। গতকাল আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্কে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ব্যারেলপ্রতি ৮০ দশমিক ১৪ ডলারে নেমেছে।
বন্ড মার্কেট: এদিকে বন্ড মার্কেটও হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি মার্কেট ১.৫৬১৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আর ৩০ বছর মেয়াদি বন্ড মার্কেট কমেছে ১.৮৯৬৩ শতাংশ।