বিশ্ব পুঁজিবাজার সংস্কারে পরামর্শ আইএমএফ প্রধানের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্ববাজারে টালমাটাল অবস্থা, বিশেষ করে ওয়াল স্ট্রিটের পতন এই মুহূর্তে তেমন দুশ্চিন্তার কারণ নয়। কারণ বিশ্বজুড়ে আর্থিক প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্দে দুবাইয়ে এক বাণিজ্য সভায় গত রোববার এ মন্তব্য করেন। তবে শেয়ারবাজারে ভবিষ্যৎ সংকট এড়াতে এই খাতের আরও সংস্কার জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। এই প্রথম বিশ্ববাজারের পতন নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন লাগার্দে। খবর রয়টার্স।

লাগার্দে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে প্রবৃদ্ধির চিত্র দেখে আমি আশাবাদী। কিন্তু অর্থনীতি স্বাভাবিক ছন্দে এগোবে, এটা ধরে নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায় না। আমি কোনো বিপদঘণ্টা বাজাতে চাচ্ছি না। তবে হুঁশিয়ার করছি।’

বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নিয়ে আইএমএফের পূর্বাভাস এদিন ফের উল্লেখ করেন লাগার্দে। গত মাসেই তারা জানিয়েছে, চলতি ২০১৮ সালে বিশ্বের সব দেশ মিলিয়ে গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী ২০১৯ সালেও তা বহাল থাকার কথা। এ পরিপ্রেক্ষিতে আরও আর্থিক সংস্কারের পক্ষে আইএমএফ কর্ণধার।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে দিনে রেকর্ড পতনের সাক্ষী ছিল মার্কিন শেয়ার সূচক ডাও-জোন্স। সোমবার তা একসময়ে এক হাজার ৬০০ পয়েন্ট পড়ে যায়। দিনের শেষে ডাও খোয়ায় এক হাজার ১৭৫ পয়েন্ট। গত মঙ্গলবার এর জেরে ভারতে সেনসেক্সও দিনের শুরুতে পড়ে গিয়েছিল এক হাজার ২৭৫ পয়েন্ট। কিন্তু পরে কিছুটা সামলে তা দাঁড়ায় ৫৬১ দশমিক ২২ পয়েন্টে। আবার বৃহস্পতিবারও ডাও এক হাজার পয়েন্টের বেশি পড়েছে। বিশ্বায়নের জমানায় মার্কিন মুলুকে এই ধসের প্রভাব শুক্রবার পড়েছে ভারত, ইউরোপ, এশিয়াসহ বিশ্ববাজারে।

গতকাল সোমবার শুরু হওয়া সপ্তাহেও মার্কিন বাজার পড়তে পারে বলে রোববার ফের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, কারণ এই সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার কথা। তা আরও বাড়লে ফের পতনের গ্রাসে পড়তে পারে বিশ্ববাজার।

এদিকে দুবাইয়ে একই দিনে অনুষ্ঠিত আরব ফিসক্যাল ফোরামে বক্তৃতায় বেশকিছু আরব দেশের নেওয়া ‘প্রতিশ্রুতিশীল’ সংস্কার কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছেন লাগার্দে। তবে এখনও যেসব অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা রয়েছে, তা থেকে উত্তরণে এসব দেশকে আরও কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

লাগার্দে আরও বলেন, তেলের নিম্নমুখী দামের কারণে আরবের তেল রফতানিকারক দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে বর্ধনশীল ঋণ, বেকারত্ব, দ্বন্দ্ব, সন্ত্রাসবাদ ও শরণার্থী সমাগমের কারণে তেলের আমদানিকারক দেশগুলোও ভালো অবস্থায় নেই।

লাগার্দে জানিয়েছেন, অর্থনীতিতে অনুকূল পরিস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও আরব দেশের সরকারি ব্যয় এখনও অনেক বেশি। বিশেষ করে তেলসম্পদে ধনী দেশগুলোয় এ প্রবণতা বেশি চোখে পড়ে। এসব দেশে সরকারি ব্যয় জিডিপির ৫৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। অনেক আরব দেশ খরচ কমাতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা খুবই সাময়িক সময়ের জন্য বলে উল্লেখ করেন লাগার্দে।

এদিকে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলসহ (জিসিসি) অন্যান্য আরব দেশ বিগত বছরগুলোয় জ্বালানিতে ভর্তুকি কমালেও তা তুলনামূলক বিচারে এখনও অনেক বেশি। এএমএফের চেয়ারম্যান আবদুল রহমান আল-হামিদি বলেন, গত বছর আরব দেশে জ্বালানিতে ভর্তুকি ১১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার থেকে কমে ৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০