বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে ঢাকা কাস্টের ওয়েবিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সকল জনগনের মাঝে সচেতনতা গড়ে তুলতে পারলেই কেবলমাত্র অসংক্রামক রোগব্যাধী থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে হেলথকেয়ার স্টার্ট-আপ ঢাকা কাস্ট লিমিটেড-এর আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এমনটায় জানান অংশগ্রহনকারী আলোচকবৃন্দ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিরাজমান চ্যালেঞ্জসমূহ মেকাবেলার কারণ শীর্ষক এ ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান। এছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়ে তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন।

ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা কাস্ট লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ডা: ফাহরীন হান্নান। এসময় তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা ঢাকা কাস্টের প্রধান কাজ ডায়াবেটিস রোগীদের সবধরনের সেবা প্রদান করা। ২০২০-এর মার্চে শুরু হওয়া করোনার মহামারী রোধে লকডাউন ঘোষণার ফলে তাদের বেশ চ্যালেঞ্জ-এর সম্মুখীন হতে হয়। সেসময় ইন্টারনেটের মাধ্যমে ১২’শ কোভিড আক্রান্ত রোগীদের নানা ধরনের সেবা প্রদান করা হয়েছে। আর সেই কাজের স্বীকৃতি সরূপ ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে ঢাকা কাস্ট। এখন পর্যন্ত ঢাকা কাস্ট তিন হাজার ডায়াবেটিস রোগীকে সেবা প্রদান করেছে। ঢাকার বাইরে সিলেটে পরীক্ষামূলকভাবে সেবা প্রদান করছি আমরা এবং ফলপ্রসু সাড়াও পেয়েছি। অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা কাস্ট গ্রাম এলাকায়ও এই সেবা ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক (ভিট্রিও-রেটিনা) ডা: নুজহাত চৌধুরী শম্পা। তিনি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অসংক্রামক রোগীদের সার্বজনীন সেবা প্রদানের চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সার্বজনীন সেবা বলতে সব ধরনের মানুষকে সুলভ মূল্যে যাবতীয় সকল ধরনের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করাকে বোঝানো হয়ে থাকে। সেখানে কারও মধ্যে কোন বিভেদ করা যাবেনা। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের চিকিৎসা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় বড় কয়েকটি শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সফল সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা গড়ে তুলতে হলে আমাদেরকে গ্রামের মানুষের চিকিৎসাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেইসাথে জনসাধারনের মাঝে ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য সকল সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এমনকি সেই লক্ষ্যে আমাদের সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘এবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে তিনটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে পরিবেশ, দ্বিতীয়টি অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং তৃতীয়টি স্বাস্থ্য সেবা খাতে বিরাজমান বৈষম্য। আমাদের দেশে স্মার্টফোনের ব্যবহার এখন দারুণভাবে বেড়েছে। এই স্মার্টফোনগুলো প্রচুর তাপ উৎপাদন করে যা পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে। এছাড়াও গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক অবকাঠামোগুলোও অনেক তাপ উৎপাদন করে থাকে যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আমরা চেষ্টা করছি জীবাশ্ম জ্বালানীর বদলে নবায়াণযোগ্য জ্বালানী যেমন সৌরশক্তি ব্যবহার করতে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ অনেকখানি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতের বিরাজমান চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করতে হবে। পাশাপাশি চ্যালেঞ্জগুলো কোথায় আছে তা খুঁজে বের করতে হবে।

ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা: শেখ মোহম্মদ শহীদ উল্লাহ (পিএইচডি), ফাউন্ডেশন ফর ডক্টর্স সেফটি অ্যান্ড রাইটস (এফ ডি আর)-এর উপদেষ্টা ডা: আব্দুন নুর তুষার, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড রিহ্যাবিটেশন ইন ডায়াবেটিস এনডোক্রিন অ্যান্ড মেটাবলিক ডিজর্ডার্স (বারডেম) হাসপাতালের হরমোন বিভাগের ডায়াবেটিস থাইরয়েড ও হরমোন বিশেষজ্ঞ ডা: মো: ফিরোজ আমিন প্রমূখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০