নিজস্ব প্রতিবেদক: বিসিবির পরিচালক লোকমান হোসেন ভুঁইয়া ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ ওরফে ক্যাসিনো সাঈদের বিরুদ্ধে আদালতে জমা দেয়ার জন্য চার্জশিট প্রস্তুত করা হয়েছে। দুদকের কমিশন সভায় এ চার্জশিট অনুমোদন দেয়া হয়। লোকমানের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো বসিয়ে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ আয়ের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তদন্তে লোকমান হোসেনের ৬ কোটি ৭২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। সাঈদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৭৮ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪ টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
গতকাল এক ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন জানান, আগামী দু-একদিনের মধ্যে এটি আদালতে জমা দেয়া হবে।
দুদক সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাবেক পরিচালক লোকমান হোসেনের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে।
ওই তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তে লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে ৬ কোটি ৭২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৩ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া তিনি অবৈধভাবে অর্জিত ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮০ টাকা অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ এনে চার্জশিট প্রস্তুত করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলোচিত কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ ওরফে ক্যাসিনো সাঈদ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৭৮ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪ টাকা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ওমানে পাচার করে অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় ১৩ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
অনুমোদিত চার্জশিটে মূল অভিযোগ ছিল পাঁচ কোটি ৬০ লাখ ৩৩ হাজার ২২৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের। দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শিগগিরই আদালতে চার্জশিট জমা দেবেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার।
২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বরখাস্ত হওয়া কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে চার কোটি ৪৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৬১ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে মামলা করে দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করা হয়। যদিও চার্জশিটে অবৈধ সম্পদের অর্থ বেড়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামি সাঈদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনাসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা এবং অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ চার কোটি ৪৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৬১ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজের দখলে রেখেছেন।