Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 4:39 pm

বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনামকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক মাহবুবুল আনামকে চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহষ্পতিবার দুপুর সাড়ে ৩টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মনজুর আলম মাহবুবুল আনামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

এর আগে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে চিঠি দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মনজুর আলম। আর ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর মাহবুবুল আনামের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তার বিদেশযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।

দুদক কার্যালয় শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুল আনাম বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডে যারা আছেন, তারা জানেন আমি কী করি, যা জানার তাদের কাছ থেকে জানতে পারবেন। দুদক আমার কাছে সম্পদ বিবরণী চেয়েছে। আজ তা জমা দিয়েছি।’

দুদকের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশনের পুলিশের কাছে পাঠানো এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, ‘বদেশে অর্থ পাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সপরিবারে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধান কাযক্রম পরিচালনার স্বার্থে মাহবুবুল আনামের বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।’

২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মাহবুবুল আনামকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নোটিস দিয়েছিল দুদক। নোটিশে বলা হয়, তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশনের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, তিনি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাই নোটিশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তার নিজের, নির্ভরশীল ব্যক্তিদের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ধারিত ফরমে দাখিল করতে বলা হয়েছিলো।

দুদকের অনুসন্ধানে মাহবুবুল আনামের নামে চার কোটি ৭৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকার স্থাবর ও ৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৪ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৬২ কোটি ৫৪ লাখ ৮২ হাজার ৯৪৪ টাকার সম্পদের তথ্য উঠে আসে। এর জের ধরেই অভিযোগ খাতিয়ে দেখা হচ্ছে। যার অংশ হিসেবেই বিসিবির পরিচালক মাহবুব আনামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।

উল্লেখ্য, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং, পর্যটন সেবা ও কুরিয়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে মাহবুবুল আনামের। তিনি বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএফএফএ) সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বিসিবির ওই পরিচালকের বিরুদ্ধে টেন্ডারে অনিয়মের মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেয়া,  নিয়োগ বাণিজ্য ও স্পন্সর নির্বাচনে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকা অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।