বীকন পয়েন্ট

অনেক প্রতিষ্ঠান মুনাফা অর্জনকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না, বরং সমাজসেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলে। মানবতার কল্যাণে কাজ করে নিরন্তর। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান ‘বীকন পয়েন্ট’। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে মাদকের গ্রাস থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে বীকন পয়েন্ট কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী একটি মারাত্মক ব্যাধি মাদকাসক্তি। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এটি

আর্থ-সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারণও বটে। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে গোটা দেশ। এই সমস্যা উত্তরণে বীকন পয়েন্টের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।

বীকন গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বীকন পয়েন্ট। বীকন ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে পথচলা শুরু করে গ্রুপটি। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রথম ক্যানসারবিরোধী ওষুধ বাজারজাত করে বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস। অল্প সময়ের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় এই ফার্মাসিউটিক্যালসটি। এরপর বাড়তে থাকে গ্রুপটির অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। বর্তমানে গ্রুপটিতে রয়েছে বীকন রিয়েল এস্টেট, বীকন পাওয়ার সিস্টেম লি., বীকন সেফালোস্পোরিনস প্রভৃতি। এই গ্রুপের করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) প্রকল্প বীকন পয়েন্ট। ২০১৩ সালের এপ্রিলে যাত্রা শুরু করে বীকন পয়েন্ট।

প্রতিষ্ঠানটির সূত্রমতে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের প্রথম মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগ নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র এটি। রাজধানীর গুলশানে কেন্দ্রটির অবস্থান। পারিবারিক আবহে অল্প চিকিৎসার্থী নিয়ে অবকাঠামাটি গড়ে তোলা হয়েছে। এর শয্যাসংখ্যা ৪০, যার দশটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এখানে পারিবারিক পরিবেশের অনুভূতি পেয়ে থাকেন রোগীরা। এমনকি চিকিৎসা শেষে তাদের বীকন পরিবারের স্থায়ী সদস্য হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বাস করে, সবাই আরোগ্য লাভের উপযুক্ত। সঠিক চিকিৎসা ও সহায়তা পেলে তাদের পক্ষেও কর্মক্ষম জীবনযাপন করা সম্ভব।

 

চিকিৎসা পদ্ধতি

বীকন পয়েন্ট সব চিকিৎসাধীন রোগীর নিজস্ব চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এজন্য রয়েছেন বিশেষজ্ঞ মনোচিকিৎসক। তারা আধুনিক ও সুবিন্যস্ত উপায়ে রোগীর মানসিক চিকিৎসাসহ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। সব রোগীর জন্য স্বতন্ত্র চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। সবার চাহিদা নিরূপণ করে শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। রোগীরা যেন আবার আসক্ত না হয়, সেজন্য রয়েছে সেফ হাউজ ও সাপোর্ট গ্রুপের সহায়তা।

 

সেবা

চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করার জন্য উন্নয়নমূলক বেশ কয়েকটি সেবা চালু রয়েছে এখানে

সঠিক ও সুনির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করানো হয় চিকিৎসাধীন রোগীকে

এখানে রয়েছে পর্যাপ্ত আধুনিক যন্ত্রপাতি সম্বলিত ব্যায়ামাগার

রয়েছেন দক্ষ শরীরচর্চাবিদ

মানসিক শক্তি বাড়ানোর জন্য রয়েছে যোগব্যায়ামের ব্যবস্থা

ইনডোর গেমসের মাধ্যমে রোগীরা চমৎকার সময় কাটাতে পারেন। দাবা, ক্যারম, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড প্রভৃতি খেলার সুযোগ রয়েছে

নামাজের সুব্যবস্থা তো আছেই

চাহিদা অনুযায়ী প্রতি রোগীর জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয়

সপ্তাহের এক দিন আর্মি গলফ ক্লাবের গ্রিন পয়েন্ট রেস্টুরেন্টে সাপোর্ট গ্রুপ মিটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়

সপ্তাহে এক দিন দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও বিনোদন পার্কে ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীদের

স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, বাংলা নববর্ষ, আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসসহ বিভিন্ন উপলক্ষ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা হয়

 

পরিচালনা পর্ষদ ও দায়িত্বরত ব্যক্তিরা

বীকন পয়েন্টের চেয়ারম্যান মো. এবাদুল করিম। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন মো. নিয়াজুল করিম। প্রকল্পপ্রধান হিসেবে রয়েছেন মো. হানিফ। দেশের খ্যাতনামা কয়েকজন সাইকিয়াট্রিস্ট রয়েছেন এখানে। মেডিক্যাল সার্ভিসের প্রধান হিসেবে রয়েছেন ডা. মো. নূরুল হক। এছাড়া রয়েছেন সার্বক্ষণিক প্রশিক্ষিত ও সুদক্ষ ডাক্তার, কাউন্সেলর, মনোবিজ্ঞানী ও চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী।

 

সলফতা

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ বীকন পয়েন্টের সেবা নিয়ে সুস্থ ও কর্মময় জীবনযাপন করছেন। উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সেবাগ্রহীতার সংখ্যা। চিকিৎসা টিমে যুক্ত হচ্ছেন দেশবরেণ্য মনোচিকিৎসরা। প্রতিষ্ঠানটি আশা করে, মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগ চিকিৎসায় বীকন পয়েন্ট সরকারের পাশপাশি তাদের সেবা শুধু অব্যাহত রাখাই নয়, বরং আরও সম্প্রসারিত করবে।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০