Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:59 pm

বুথফেরত জরিপে বিজেপির রেকর্ড জয়ের আভাস

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের বুথফেরত জরিপে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির রেকর্ড জয়ের আভাস পাওয়া গেছে। নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন বুথফেরত জরিপ এমন পূর্বাভাসই দিয়েছে। খবর: আল-জাজিরা।

বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশটির সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচন বিরোধী জোটকে আরও ধসিয়ে দিয়েছে বিজেপি। সাত দফার লোকসভা নির্বাচন শুরু হয় গত ১৯ এপ্রিল। শেষ হয় গত শনিবার। ভোট গণনা ৪ জুন। ভোট গণনা শেষেই পাওয়া যাবে আনুষ্ঠানিক ফলাফল। তবে গতকাল ভোট শেষ হওয়ার পরই আসতে শুরু করে বিভিন্ন বুথফেরত জরিপের (এক্সিট পোল) ফলাফল।

বুথফেরত জরিপ অনুযায়ী, বিজেপি গত লোকসভা নির্বাচনের (২০১৯ সাল) চেয়েও এবার ভালো ফল করতে যাচ্ছে। বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস সঠিক হলে ব্যাপারটি এমন দাঁড়াবে যে ব্যাপক অসমতা, রেকর্ড বেকারত্ব, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির মতো বিষয়গুলো মোদির দল বিজেপির ভোট কমাতে পারেনি; বরং তা বেড়েছে।

স্বাধীন ভারতে এর আগে আর কোনো প্রধানমন্ত্রীই টানা তিনবারের প্রতিবারই আসনসংখ্যা বাড়িয়ে লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারেননি। ফলে মোদির জন্য এই জয় এক বিরল ইতিহাসের জš§ দিতে যাচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যম সংস্থাগুলো প্রকাশিত কমপক্ষে সাতটি বুথফেরত জরিপের এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে বিজেপি ও তার মিত্ররা লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৩৫০ থেকে ৩৮০টি আসন পেতে পারে। তবে এসব বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস মানতে নারাজ বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট।

টানা দুই মেয়াদে কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকার হটানোর আশা নিয়ে দুই ডজনের বেশি রাজনৈতিক দল নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠন করা হয়েছিল। বিরোধী জোটটি বলছে, তারা এ ব্যাপারে খুবই আশাবাদী যে ভোট গণনায় তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে। ভারতে বুথফেরত জরিপগুলোর যথার্থতা নিয়ে সামঞ্জস্যহীনতার রেকর্ড আছে। অতীতে এসব জরিপ কখনও বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য আসনপ্রাপ্তির সংখ্যা কমিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে। কিংবা অতিরিক্ত আসন প্রাপ্তির আভাস দিয়েছে। তবে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া গত দুই দশকে এসব জরিপ বেশির ভাগই ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে সাধারণ প্রবণতার পূর্বাভাস দিতে পেরেছে।

নয়াদিল্লিভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের (সিপিআর) জ্যেষ্ঠ ফেলো নীলাঞ্জন সরকার বলেন, মোদি বিপুল জনপ্রিয়। এ কারণেই তার দল বিজেপির সব প্রচারের কেন্দ্রে ছিলেন মোদি।

বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট দেশটির দক্ষিণের রাজ্যগুলোয় ভালো করবে বলে অনুমান করা হচ্ছিল। কিন্তু বেশির ভাগ বুথফেরত জরিপের ইঙ্গিত হলো, দক্ষিণের রাজ্যগুলোয় অত্যাশ্চর্য সাফল্য অর্জন করতে যাচ্ছে বিজেপি। বেশ কয়েকটি বুথফেরত জরিপ পূর্বাভাস দিয়েছে, বিজেপি কেরালায় দু-তিনটি আসন পেতে পারে। ভারতীয় বামদের শেষ শক্ত ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত এই রাজ্যে মোদির দল কখনও জয়ী হয়নি। জরিপ অনুযায়ী, বিজেপি এবার তামিলনাড়ুতে এক থেকে তিনটি আসন পেতে পারে। গত নির্বাচনে এখানে কোনো আসনই পায়নি বিজেপি।

কর্ণাটক ছাড়া দাক্ষিণাত্যে হিন্দি-বলয়ের দল হিসেবে পরিচিত বিজেপি। গত নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্যের ২৮ আসনের মধ্যে ২৫টিতে জিতেছিল। এবারের নির্বাচনে বিজেপি ও তার মিত্ররা কর্ণাটকে আগের আসন ধরে রাখার আশা করছে। অন্যদিকে, তেলেঙ্গানার বিজেপি একক বৃহত্তম বিজয়ী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। অর্থাৎ বুথফেরত জরিপ অনুযায়ী, বিজেপি দক্ষিণে তার অবস্থানের বিস্তার ঘটাতে চলছে।

পূর্বাভাসের আলোকে রাজনৈতিক ভাষ্যকার অসীম আলী বলেন, দক্ষিণে বিজেপির সাফল্যলাভ আশ্চর্যজনক বিষয়। ভবিষ্যদ্বাণীগুলো দক্ষিণে বিজেপির বিশাল সাফল্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। জরিপে যতগুলো আসন বিজেপিকে দেয়া হয়েছে; ফলাফলে তারা ততগুলো না পেলেও দক্ষিণে তাদের ভোট বাড়ার বিষয়টি একটি বড় পরিবর্তন।