বুদ্ধি দিয়ে দূর করুন সাইবার বুলিং

ফেসবুক কিংবা ই-মেইলে হুমকি পেয়েছেন? একের পর এক স্প্যাম জড়ো হচ্ছে আপনার ইনবক্সে? আপনাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে? অপমানজনক উক্তি করেছে কেউ? আপনার অনুমতি ছাড়া কেউ ছবি ব্যবহার করছে? ব্লগে আপনার চরিত্রকে খারাপভাবে তুলে ধরা হচ্ছে? এসব প্রশ্নের যে কোনো একটির উত্তর হ্যাঁ হলেই বুঝতে হবে আপনি সাইবার বুলিংয়ের শিকার।

যে বয়সের মানুষই সাইবার বুলিংয়ের শিকারে পরিণত হতে পারেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু ও উঠতি বয়সীরা সাইবার বুলিং এ আক্রান্ত হয় বেশি। আমাদের দেশে সাইবার কমান্ড ও পুলিশিং ব্যবস্থা খুব একটা শক্ত নয়। তাছাড়া সাইবার বুলিং নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বও কাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে এ উৎপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে নিজেদেরই সচেতন হতে হবে। সচেতনতার জন্য যা করতে পারেন-

স  অনেকে অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে নিজেকে জাহির করে। এটা এড়িয়ে চলা উচিত। একান্ত গোপনীয় বিষয় জনসম্মুখে না আনাই ভালো। ঠিকানা, ফোন নম্বার, পাসওয়ার্ড, ছবি জাতীয় তথ্য সর্বজনীন করা থেকে বিরত থাকুন। নিজের পাশাপাশি অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়েও সংযত থাকুন। বিনা অনুমতিতে কারো কোনো তথ্য প্রকাশ করা উচিত নয়। এটা সুস্পষ্ট আইনের লঙ্ঘন।

স  দুর্ব্যবহারের জবাবে দুর্ব্যবহার নয়। যারা কটু কথা বলে বেড়ায়, অহেতুক ঝগড়া করে তাদের এড়িয়ে চলুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা আগ্রাসী ধরনের, তাদের পরিহার করুন। চাইলে ব্লক করে দিতে পারেন।

স  বেশিরভাগ অফিস একই মেইল আইডি ব্যবহার করে থাকে। এ রকম দেখা যায় অনেক পরিবারের বেলায়ও। সুতরাং বিব্রত হওয়া বা করা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক ব্যক্তির ঠিকানায় মেইল করুন। পাঠানোর আগে ভালোভাবে গ্রহীতার ঠিকানা যাচাই করে নিন।

স  যা পড়বেন তা-ই বিশ্বাস করা ঠিক নয়। অর্থাৎ অন্যকে প্রতারণার সুযোগ দেবেন না। কম্পিউটারের ওপারে কে আছে, বোঝার সাধ্য নেই কারো। এ কারণে অনলাইনে অনেকে মেয়ে বা ছেলে সেজে প্রতারণা করে থাকে। বয়স নিয়ে লুকোচুরি তো রয়েছেই। সুতরাং অপরিচিত কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করাই ভালো।

স  অনলাইনে প্রতিক্রিয়া দেখাতে যাবেন না। রাগের মাথায় কোনো মেসেজের উত্তর না দেওয়াই ভালো। আপনার অতিরিক্ত ভাবাবেগের কারণে অন্যের ক্ষতি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রিপ্লাই দেওয়ার আগে ভালো করে ভাবুন। কিছু সময়ের জন্য বিরতি নিন।

স  ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে রেজিস্ট্রেশন করুন। অনেকে পুরস্কারের আশায় বিভিন্ন সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে। এসব সাইটের অধিকাংশই ভূয়া। ফল হিসেবে একের পর এক বিরক্তিকর স্প্যাম মেইল জড়ো হতে থাকে মেইলে।

স  না বুঝে অচেনা বা অপরিচিত কোনো মেইল ওপেন করা ঠিক নয়। এটা নতুন ধরনের কোনো ভাইরাস হতে পারে। কিংবা আপনাকে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতির সামনে।

স  ব্যক্তিগত ও সাইবার জীবনের মধ্যে একটা বিভাজন মেনে চলুন। মনে যা আসবে তা-ই স্ট্যাটাস হিসেবে দেওয়া ঠিক নয়। কোন ছবি প্রকাশ করা যায় আর কোনটি যায় না, তা আপনাকে বুঝতে হবে।

স  যতটা সম্ভব সাক্ষ্যপ্রমাণ রেখে দিন। ডিজিটাল জামানায় সব ধরনের তথ্য, মেসেজ, ছবি, উক্তি সহজে সংরক্ষণ করা যায়। ভবিষ্যতে ঝামেলা এড়াতে নিজের প্রয়োজনে এগুলো সংগ্রহে রাখুন।

স  নিজেকে পরিপূর্ণ নেটিকেট বা ইন্টারনেট এ টিকিট হিসেবে উপস্থাপন করুন। ইন্টারনেট ব্যবহারে সৎ থাকা উচিত। কখনোই নিজেকে অন্যের পর্যায়ে নিজে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না; হোক সেটা উঁচু বা নিচু। অন্যের কাছ থেকে যে ব্যবহার প্রত্যাশা করেন, আগে নিজে সে ধরনের আচরণ করুন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০