শেয়ার বিজ ডেস্ক: বুরকিনা ফাসোয় গত তিন দিনে সশস্ত্র গোষ্ঠীদের পৃথক তিনটি হামলায় অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। খবর: রয়টার্স।
দেশটির উত্তরাঞ্চলের সুম প্রদেশের আরবিন্দা শহরে গত সোমবার সর্বশেষ হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। শহরের মেয়র বুলেইমা বেরেম জানান, এদিন সকালে পানি আনতে গিয়ে জঙ্গি হামলার কবলে পড়েন স্থানীয়রা। এতে অন্তত ৮ জন নিহত হন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জঙ্গিরা পানির টাওয়ার ও পাম্পগুলোয় হামলা করছে। এটা তাদের নতুন কৌশল হতে পারে বলে মন্তব্য করেন মেয়র।
এর আগের দিন রোববার একই অঞ্চলের নামেনতেঙ্গা প্রদেশে পৃথক আরেক হামলার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৩ মিলিটারি পুলিশের কর্মকর্তা রয়েছে বলে মিলিটারি পুলিশ জানায়। এর আগে গত শনিবার উদালন প্রদেশে অঘোষিত একটি সোনার খনিতে জঙ্গি হামলায় ৯ জন নিহত হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা।
সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে বুরকিনা ফাসো, মালি ও নাইজারের অবস্থান। এই তিন দেশের সাহেল অঞ্চলে কয়েক বছর ধরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সমর্থক স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো। এতে তারা সফলও হয়েছে। ২০১২ সালে মালির মরুভূমির উত্তরাঞ্চল জঙ্গিরা দখল করে নিয়েছিল। পরের বছর তারা দেশটির রাজধানী বামাকোতে অভিযান চালানোর লক্ষ্যে রওনা হয়। তখন ফ্রান্স হস্তক্ষেপ করে তাদের পিছু হটিয়ে দেয়। কিন্তু পরে বিদ্রোহীরা আবার সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে।
সেই থেকে সাহেল অঞ্চলে তাদের হামলায় কয়েক হাজার মানুষ নিহত ও ২০ লাখেরও বেশি স্থানীয় বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অঞ্চলটিতে কয়েক হাজার বিদেশি সেনা রয়েছে। তাই হত্যাকাণ্ডের ধারা অব্যাহত থাকায় নির্বাচিত সরকারের ওপর থেকে জনগণের আস্থা উঠে গেছে।
সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় হতাশ হয়ে জানুয়ারিতে বিক্ষোভ শুরু হয় বুরকিনা ফাসোয়। এরপর হয় সামরিক অভ্যুত্থান। প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরেকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২০ সালে সামরিক জান্তা মালির ক্ষমতা দখল করে। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতাকে ক্ষমতাচ্যুত করা সামরিক বাহিনীর সেনারা অন্তর্বর্তীকালীন বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা ও নতুন নির্বাচনের পরিকল্পনার কথা জানায় তখন।