নিজস্ব প্রতিবেদক: হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বুড়িগঙ্গা থেকে ৭৪ স্থাপনা তিন মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জরিপ কমিটির দেয়া অবৈধ দখলদারের অবস্থান, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা দেখে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন। বুড়িগঙ্গার ওই অংশে অবৈধভাবে মাটি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব স্থাপনা। হাসপাতাল, সুপার মার্কেট, মসজিদ, আবাসিক ভবন, কারাখানাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলে রয়েছে এসব জমি।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ রায়। আর পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আমাতুল করিম। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ পরে বলেন, ‘ঢাকার ডিসি ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিটিএ) চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দিয়ে আদালত পুলিশপ্রধান ও ঢাকার পুলিশ কমিশনার এবং র?্যাবের মহাপরিচালককে সব ধরনের ধরনের সহযোগিতা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
আগামী ২৬ জুনের মধ্যে হলফনামা করে আদেশ প্রতিপালনের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী। নদীর অবৈধ দখল বন্ধ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা জনস্বার্থ মামলার রায়ে ২০০৯ সালে হাইকোর্ট নদীর সীমানা জরিপ ও দখলকারীদের উচ্ছেদসহ ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সে জরিপের সময় হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বুড়িগঙ্গার ‘আদি চ্যানেল’ চিহ্নিত জায়গাটি জরিপের বাইরে রাখা হয়।
পরে গত বছর নদীর জায়গা দখলকারীদের চিহ্নিত করতে জরিপের নির্দেশনা চেয়ে আদালতে ফের আবেদন করে এইচআরপিবি। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছর ১২ অক্টোবর হাইকোর্ট জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জরিপের নির্দেশনা দেন। সিএস (ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে), আরএস (রিভিশনাল সার্ভে) অনুসারে জরিপ চালিয়ে অবৈধ দখলদারদের চিহ্নিত করে তাদের তালিকা হলফনামা করে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী জরিপের জন্য ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরে কয়েক মাস জরিপ চালিয়ে নদীর জায়গা দখলকারীদের চিহ্নিত করে জরিপ কমিটি। সে তালিকাই হলফনামা করে আদালতে দাখিল করার পর শুনানি নিয়ে উচ্ছেদের আদেশ দিলেন উচ্চ আদালত।