Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 10:28 pm

বুয়েট প্রশাসন সতর্ক থাকলে হত্যাকাণ্ড নাও ঘটতে পারত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বুয়েট প্রশাসনের আরেকটু কেয়ারফুল (সতর্ক) থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নাও ঘটতে পারত বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
গতকাল দুপুরে তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রধান ফটক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আর যাতে আবরার হত্যার মতো কোনো ঘটনা না ঘটে সে জন্য প্রশাসনের প্রতি কী নির্দেশনা দেবেনÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না ডাক দিলে পুলিশ ভেতরে ঢোকে না, আপনারা সেটা জানেন। এ জায়গাটিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষের আরেকটু সতর্ক থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা নাও ঘটতে পারত। ভবিষ্যতে প্রশাসন ছাত্রদের প্রতি আরও নজর দেবে, দায়িত্ববান হবে বলে মনে করি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আবরার হত্যাকাণ্ড যারা সংঘটিত করেছিল এদের প্রায় সবাইকে আমরা ধরে ফেলেছি। এ পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আমি আগেও বলেছি আজও বলছি, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে, আশা করছি তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলা তদন্ত সম্পন্ন করবে। সঙ্গে সঙ্গে আমি আহ্বান রাখব, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, এ ধরনের মেধাবী ছাত্র যারা কি না আমাদের ভবিষ্যৎ, যে প্রজš§কে নিয়ে আমরা অহঙ্কার করি, এ ধরনের ঘটনায় যাতে তারা হারিয়ে না যায়, যারা এ কাজটি করেছেন, এর মতো খারাপ কাজ, এর মতো গর্হিত কাজ এর আগে আর ঘটেনি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও অনেক ঘটনাই ঘটেছে, আমরা সনি হত্যাও দেখেছি। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডটি সবার হƒদয়ে দাগ কেটেছে। আমি আশা করব, আমাদের ছাত্রসমাজ এ ধরনের ঘটনা আর দেখবে না। যাতে না ঘটে সে জন্য তারাও সজাগ থাকবে।’
আবরার হত্যার পেছনে মূল কারণ কী জানতে চাইলে বলেন, ‘এ খুনের পেছনে কারণটা কী এটা আমাদের দেখতে হচ্ছে। যারা ধরা পড়ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তদন্ত চলছে, এর পেছনে মোটিভটা কী জানার চেষ্টা চলছে। এমনি এমনি একজন আরেকজনকে হত্যা করবেÑএটা যেমন বিশ্বাসযোগ্য নয়, এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, আরও কিছু উদ্দেশ্য আছে। এর সবই আমরা খতিয়ে দেখছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করতে এসেছে, তারা সবাই মেধাবী। এ ধরনের মেধাবীরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তার ভেতরে নিশ্চয়ই কোনো কারণ রয়েছে। সে কারণগুলো উদঘাটন করে নিখুঁত ও তথ্যসমৃদ্ধ চার্জশিট দিতে চাই।’
উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক কয়েকটি চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্যের সূত্র ধরে শিবির সন্দেহে আবরারকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে।
ওই ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ গ্রেফতার ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাংগঠনিক তদন্তের ভিত্তিতে বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া গতকাল ১৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।