নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল পরিকল্পনা কমিশনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বলেন, সরকার ইতোমধ্যে মংলা বন্দরের সক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করেছে এবং দেশের উদ্যোক্তাদের এ বন্দর আরও বেশি হারে ব্যবহারের আহ্বান জানান। সরকার গৃহীত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কার্যক্রম যথাসময়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং নির্ধারিত সময়ে মানসম্মত এডিপি বাস্তবায়নে ব্যবসায়ীদের কৌশলপত্র প্রদানের আহ্বান জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী পিপিপির আওতায় সরকার গৃহীত অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের জন্য ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি লন্ডনের পুঁজিবাজারে বাংলা বন্ড চালু হয়েছে, যা দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মাঝে আসার সঞ্চার করেছে। তিনি বলেন, সরকার গৃহীত বড় ধরনের অবকাঠামো প্রকল্পসমূহের অর্থায়নে বন্ড অনেক কার্যকর অবদান রাখবে।
ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়ন ও বিনিয়োগ আকর্ষণে অবকাঠামো উন্নয়ন অপরিহার্য। তিনি জানান, গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার হাব রিপোর্টের হিসাব মতে, ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অবকাঠামো বিশেষ করে সড়ক জল ও রেলপথ, বন্দর, জ্বালানি, টেলিকম খাতের উন্নয়নে প্রায় ৬০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা প্রয়োজন এবং এ ধরনের বৃহৎ প্রকল্পগুলোর অর্থায়নে সরকারকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারি কোষাগারসহ ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করতে হয়, যার ফলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর চাপ পড়ে। এ অবস্থা উত্তরণে বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়নে ডিসিসিআই ‘বন্ড’ ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রস্তাব করে, যার ফলে বড় অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন আরও সহজতর হবে।
এছাড়াও তিনি ব্ল-ইকোনমির বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য এ খাতে গবেষণা প্রণয়ন ও বিনিয়োগের জন্য ‘ব্লুবন্ড’ চালুর প্রস্তাব করেন।
চেম্বার সভাপতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মানসম্মত ও সময়মত বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতি নিয়মিত মূল্যায়ন এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে ‘ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রকাচার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং অ্যাডভাইজরি অথরিটি (নিডমা)’ নামে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা ভোগ করতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানো এবং শিল্প খাতে নতুন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও কর্মসংস্থানের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আসন্ন অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতে বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এনকেএ মবিন, সহসভাপতি মোহাম্মদ বাশির উদ্দিন, পরিচালক ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, ইঞ্জি. মো. আল আমিন, আরমান হক, মো. জিয়া উদ্দিন, এসএম জিল্লুর রহমান, দীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, মনোয়ার হোসেন এবং মো. সাহিদ হোসেন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।