বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করা উচিত

বর্তমানে সরকার যে বৃহৎ প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছে, সেসব প্রকল্প বাস্তবায়নে পুঁজিবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করা উচিত। এতে একদিকে সঞ্চয়পত্রের ওপর চাপ কমবে, অন্যদিকে পুঁজিবাজার সম্প্রসারিত হবে। বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজার, মানি মার্কেট এবং ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এ বিষয়গুলোর উন্নয়নে সরকারের জোরালো ভূমিকা থাকা দরকার। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি উঠে আসে।
আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের এমডি ও সিইও এজেডএম সালেহ এবং বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড লিমিটেডের সিইও এসএম ফরমানুল ইসলাম।
এজেডএম সালেহ বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির কথা যদি চিন্তা করি। সেক্ষেত্রে মানি ও ক্যাপিটাল মার্কেটের যে উপাদানগুলো রয়েছে, বিশেষ করে ক্যাপিটাল এডি কোয়েসি রেশিও, গ্রোথ অব ডিপোজিট রেশিও, গ্রোথ অব অ্যাডভান্স রেশিও, কল মানি রেট প্রভৃতি বিষয়গুলো এখন পর্যন্ত ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। তবে ব্যাষ্টিক অর্থনীতির কথা চিন্তা করলে দেখা যায় কিছু ব্যাংকের অনেক প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে। শুধু প্রভিশন ঘাটতি নয় মূলধনেও অনেক ঘাটতি রয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এ ঘাটতি বেশি রয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়গুলো সমাধা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদক্ষেপ নিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর পরিশোধিত মূলধন ৪০০ কোটি থেকে ৫০০ কোটি টাকা করা হচ্ছে। তবে এটি আরও আগে করা উচিত ছিল। মানি মার্কেট ক্যাপিটাল মার্কেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই ব্যাংক সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিলে বাজারে তার প্রভাব পড়ে। দেশের পুঁজিবাজার অন্য দেশের মতো নয়। কারণ দেশের বাজার এখনও গুজবনির্ভর এবং বাজারে তেমন ভালো মানের কোম্পানি নেই।
বর্তমানে সরকার যে বৃহৎ প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছে। ওইসব প্রকল্প বাস্তবায়নে পুঁজিবাজার থেকে টাকা নেওয়া উচিত। এতে একদিকে সঞ্চয়পত্রের ওপর চাপ কমবে, অন্যদিকে বাজার সম্প্রসারিত হবে। বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজার, মানি মার্কেট এবং ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এ বিষয়গুলোর উন্নয়নে সরকারের জোড়ালো ভূমিকা থাকা দরকার।
২০১৭ থেকে ২০১৮ সালে জিডিপির তুলনায় পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন ছিল ২৪ শতাংশ। এখন তা ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু ভিয়েতনামের মতো দেশে বাজার মূলধন ৫১ শতাংশ আর ভারতে ৭৪ শতাংশ। কথা হচ্ছেÑবাজার মূলধন যদি না বাড়ে সেক্ষেত্রে বাজার কীভাবে ভালো হবে। যদি সরকারি-বেসরকারি এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রভাবিত করে বাজারের অন্তর্ভুক্ত করা যায় তাহলে দেশের অর্থনীতির যেমন উন্নয়ন হবে তেমনি পুঁজিবাজার আরও সম্প্রসারিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বাজার যখন একটু ভালো হয় তখনই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে স্পন্সরদের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। এতে ওই সব কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যায়। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এসএম ফরমানুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালে মানি ও ক্যাপিটাল মার্কেট মোটামুটি ভালো অবস্থানে ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে মানি ও ক্যাপিটাল মার্কেট অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে। যদি মানি মার্কেটে কোনো সমস্যা দেখা দেয় সেটির প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়ে। কারণ মানি ও ক্যাপিটাল মার্কেট প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত না হলেও পরোক্ষভাবে জড়িত।
বিনিয়োগকারীর উদ্দেশ্যে বলেন, পুঁজিবাজার হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা। এটি স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা নয়। যদি কোনো বিনিয়োগকারী স্বল্প সময়ের জন্য বিনিয়োগ করে বেশি লাভ করতে চায় সেক্ষেত্রে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। কারণ এটি বিনিয়োগের জন্য ভালো ধারণা নয়।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০