দেশসেরা কয়েকজন শিল্পোদ্যোক্তার সফল প্রকল্প বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড। বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অন্য সব অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের মতোই করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজে
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রাণিখাদ্য, বিশেষ করে পোলট্রি ও মাছের খাবারের গুরুত্ব রয়েছে। মোট দেশজ উৎপাদনের পাঁচ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। এ খাতে পূর্ণকালীন কাজ করছেন প্রায় এক দশমিক দুই মিলিয়ন মানুষ। একই সঙ্গে প্রাণিখাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অসংখ্য মানুষ। সময়ের প্রয়োজনে মাছ ও পোলট্রি খাবার বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় খাতে পরিণত হয়েছে। সংগত কারণে এ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন। এর গুরুত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার মাছ চাষ, পোলট্রি ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ দিচ্ছে উদ্যোক্তাদের। তবে গুণগত মান ও সুষম খাদ্যের অভাবে খাতটি খুব একটা ভালো অবস্থানে যে রয়েছে তা বলা যাবে না। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। সফলও হচ্ছে অনেকে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড। বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এটি।
দেশসেরা কয়েকজন শিল্পোদ্যাক্তার সফল প্রকল্প বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড। বড় ধরনের শিল্প খাতে উদ্যোক্তাদের অতীত অভিজ্ঞতা ছিল সবচেয়ে বড় পুঁজি। দেশে প্রাণিখাদ্যের অপর্যাপ্ততা কিংবা দুষ্প্রাপ্যতা নিয়ে তারা চিন্তিত ছিলেন। কীভাবে এ খাতের উন্নয়ন করা যায়, সেই চিন্তা থেকেই দেশে উন্নতমানের প্রাণিখাদ্য উৎপাদনের কাজ শুরু করেন তারা। তারা সব ধরনের পোলট্রি ও মাছের খাবার উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা থেকে এই প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এজন্য এশিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন উদ্যোক্তারা।
পরিচালনা পর্ষদ
বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোরশদ আলম এমপি। ব্যবস্থাপনা টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন মো. ফিরোজ আলম। পুরো ব্যবসার দেখভালও করেন তিনি। ফিরোজ আলম পরিচালনা পর্ষদে যোগ দেন ১৯৯৮ সালে। তিনি বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে আসীন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলস সিটি কলেজ থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে বিএস সম্পন্ন করেন তিনি।
পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন মো. জসিম উদ্দিন, হুমায়ূন কবির, সাইফুল আলম ও শামসুল আলম প্রমুখ। শুরুটা ভীষণ চ্যালেঞ্জের হলেও কর্মদক্ষতা, অধ্যবসায় আর অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে এ প্রতিষ্ঠান। গুণগত মান ও স্বকীয়তার ওপর ভর করে টিকে আছে তারা। পরিণত হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় পোলট্রি খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে।
গ্রাহকের কাক্সিক্ষত চাহিদা পূরণকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজের কর্তৃপক্ষ। প্রতিযোগীদের তুলনায় তাদেরকে সঠিক পণ্যটি সরবরাহ করতে বেশ আন্তরিক তারা। অন্য প্রতিযোগীদের চেয়ে মর্যাদা ও শীর্ষ অবস্থানে থাকা তাদের অন্যতম লক্ষ্য।
করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি
বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অন্য সব অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের মতোই করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজেও। কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ করছে তারা। কর্মীদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এখানে। বাজার মনিটরিং ও গবেষণার কারণে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে আছে এই প্রতিষ্ঠানটি। একই সঙ্গে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ জনশক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ধরে রাখছে তারা। পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের কার্যকর দিকনির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
পণ্য
পোলট্রি খাদ্য
পোলট্রি খামারের জন্য খাদ্য উৎপাদন করে প্রতিষ্ঠানটি। মুরগি, মুরগির বাচ্চা, পাঁতিহাস, রাজহাসসহ আরও অনেক ধরনের পাখির জন্য খাবার প্রস্তুত করে। এখানে রয়েছে ব্রয়লার ফিড, লেয়ার ফিড, মার্কেট ফিড ও সোনালি ফিড।
মাছের খাবার
হ্যাচারি ও পুকুরের মাছের জন্য খাবার উৎপাদন করে তারা। এর মধ্যে রয়েছে পাঙ্গাশ ফিড, তেলাপিয়া ফিড, কই, সিং, মাগুর ফিড, কার্প ফিড ও চিংড়ি ফিড।
গবাদিপশুর খাবার
গরু, ভেড়া, ছাগলসহ অন্য গবাদিপশুর জন্য খাবার উৎপাদন করা হয় এখানে। এর মধ্যে উল্লেখ করা যায় ক্যাটল ফ্যাটেনিং ও ক্যাটল মিল্কিংয়ের কথা।
গুণগত মানই বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেডের অন্যতম হাতিয়ার। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নিজস্ব শক্তিশালী ও দক্ষ কোয়ালিটি কন্ট্রোল টিম। এখানে রয়েছে আধুনিক কোয়ালিটি কন্ট্রোল সিস্টেম। এসব কারণে গ্রাহকদের শতভাগ বিশুদ্ধ পণ্য সরবরাহ করে থাকে এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির সূত্রমতে, দেশের মধ্যে সেরা প্রাণিখাদ্য সরবরাহ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু তা-ই নয়, ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিও করে থাকে বেঙ্গল ফিড অ্যান্ড ফিশারিজ। এভাবে দেশ ও অর্থনীতির কল্যাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।
রতন কুমার দাস
