প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ইউনিয়নের কাকবসিয়া গ্রামের খেয়াঘাটসংলগ্ন ৩০০ ফুট এলাকাজুড়ে এ ভাঙন দেখা দেয়। তবে এই ভাঙন দেখা দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে এখনও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও খাজরা ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। খেয়াঘাটের মাঝি আব্দুল খালেক গাজী ও মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, গত রোববার ফজরের নামাজ আদায় করে খেয়াঘাটে আসি। রাতের জোয়ারের পানি নামার সঙ্গে সঙ্গেই ফাটল ধরা শুরু হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই ইটের সোলিংয়ের রাস্তা ও যাত্রী ছাউনিসহ ঘাটের পাড়ের ৩০০ ফুট জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাঁধ সংস্কার না করলে নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে।
কাকবসিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলা, আম্পান, বুলবুলসহ একাধিক দুর্যোগের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত এসব এলাকার নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ। আমরা ত্রাণ চাই না, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল জোয়ারের আঘাতে খোলপেটুয়া নদীর কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় ৩০০ ফুট বাঁধ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। পরে নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায়।
চেউটিয়া গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী রোকন সানা অভিযোগ করে বলেন, একই স্থানে গত তিন বছরে তিনবার ভেঙেছে। যখনই ভাঙে তখন পাউবোর কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেন, সেই স্থানে মাটি দিয়ে যায়। আগে থেকে কোনো কাজ তারা করেন না। ভাঙনের পর দুই দিন পার হলেও পাউবোর লোক বা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এখনো দেখা যায়নি।
আনুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, খেয়াঘাটসংলগ্ন ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার না করলে আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও খাজরা ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষের প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় বলেন, খোলপেটুয়া নদীর কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় ভাঙনের কথা শোনা মাত্রই পাউবোকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু হবে। এ ব্যাপারে পাউবোর এসও মোমেন আলী বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙন প্রতিরোধে নকশা তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
