বেড়েছে চাল আমদানি, কমেছে গম

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সময় চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকলেও কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তা আমদানি হচ্ছে। এর মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছর চাল আমদানি কমলেও গত অর্থবছর আবার তা কিছুটা বেড়েছে। যদিও এ বছর বোরোর ফলন ভালো হওয়ায় চলতি অর্থবছর চাল আমদানি কমাতে চাচ্ছে সরকার। তবে কয়েক বছর ধরে টানা কমছে গম আমদানি।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে দেশে চাল আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয় ছয় লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন ও বেসরকারিভাবে চার লাখ ২১ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন। আর বিদায়ী অর্থবছর গম আমদানি করা হয়েছে ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয়েছে ছয় লাখ ৭৯ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন ও বেসরকারিভাবে ৩৬ লাখ ১৭ হাজার ৭০ মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছর খাদ্য আমদানি করা হয়েছে ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৬০ মেট্রিক টন।

এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে চাল আমদানি হয়েছিল ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয় ছয় লাখ ৮৩ হাজার ৫০ মেট্রিক টন ও বেসরকারিভাবে তিন লাখ চার হাজার ৩৬০ মেট্রিক টন। ওই অর্থবছর গম আমদানি করা হয়েছিল ৪০ লাখ ১২ হাজার ১২০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ১২০ মেট্রিক টন ও বেসরকারিভাবে ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছর খাদ্য আমদানি করা হয় ৪৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন।

এ হিসাবে বিদায়ী অর্থবছর চাল আমদানি বেড়েছে প্রায় সাত শতাংশ। আর গম আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছর চাল ও গম দুটোরই আমদানি কমেছিল। ওই অর্থবছর চাল আমদানি করা হয়েছিল ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয় পাঁচ লাখ ৭২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন ও বেসরকারিভাবে সাত লাখ ৮৬ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন। আর গম আমদানি করা হয়েছিল ৫৩ লাখ ৪২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয় চার লাখ ৭৮ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ও বেসরকারিভাবে ৪৮ লাখ ৬৪ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছর খাদ্য আমদানি করা হয়েছিল ৬৭ লাখ এক হাজার ৯৭০ মেট্রিক টন।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছর চাল আমদানি কমিয়ে আনতে চাচ্ছে সরকার। গত ২০ জুন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলন হওয়ায় এবার বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করতে হবে না। কিশোরগঞ্জ জেলা সার্কিট হাউস মিলনায়তনে চলমান বোরো সংগ্রহ-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে আমরা আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত দুই মৌসুমে আমন ও বোরো উৎপাদন ভালো হয়েছে। তাই আমরা স্থানীয় বাজার থেকে বাড়তি শস্য কিনতে চাই।’

প্রসঙ্গত, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৩ শতাংশ বেশি ১৯ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ১ লাখ মেট্রিক টন গমও কিনতে চায় সরকার। সরকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চাল কিনতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে, যা ২০২২-৩৩ অর্থবছরের ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।

আগামী ৩১ আগস্ট শেষ হতে যাওয়া বোরো ক্রয় মৌসুমে গমের পাশাপাশি স্থানীয় বাজার থেকে সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বা ধান কিনবে খাদ্য অধিদপ্তর। আর খাদ্য অধিদপ্তর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫ লাখ টন চাল ও ৬ লাখ টন গম কিনবে। এখান থেকে নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে ভর্তুকিতে বিক্রয়সহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে বিতরণ করা হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০