অর্থবছরের প্রথম সাত মাস

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ৩০ শতাংশ

প্রতিনিধি, বেনাপোল:কভিডের মধ্যেও স্থলপথে দেশের সর্ববৃহৎ কাস্টম হাউস বেনাপোল কাস্টম হাউসে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে একই সময়ে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ হাজার ১০০ কোটি টাকা। অর্থবছরে জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে দুই হাজার ৪৩৬ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের থেকে ২১০ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরে ছিল দুই হাজার ২২৫ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা।

শুধু চলতি জানুয়ারি মাসেই রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪৬ দশমিক ২৬ কোটি টাকা, যা মাসিক ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধি ১০২ দশমিক ০৪ কোটি টাকা। এটি গত অর্থবছরে ছিল ৩৪৩ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা। 

জানা যায়, চলতি অর্থবছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর তিন মাস বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক সোয়াবিন এক্সট্রাক্ট ভারতে রপ্তানি হওয়ায় আমদানি কমে যায়। ফলে ওই তিন মাস রাজস্ব আদায়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে।

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে থাকলেও বিগত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউস। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেনাপোল বন্দরে সক্ষমতা বাড়লে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন নয়। বেনাপোল কাস্টম হাউসে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করায় আমদানিকারকরা অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের কালিতলা পার্কিংয়ে প্রতিদিন ছয় হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকে রাখা হচ্ছে সিরিয়ালের নামে। প্রতিটি ট্রাক থেকে দুই হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ। 

কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, বেনাপোল বন্দর ও রেলপথে আমদানি পণ্যের রাজস্ব আদায়, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন, ডিজিটালি অটোমেশন, চোরাচালান ও শুল্কফাঁকি রোধ, নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি না নেয়া পণ্যের নিলাম, ব্যবহারের উপযোগিতা হারানো, কিংবা ক্ষতিকর রাসায়নিক পণ্য ধ্বংস প্রভৃতি ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এছাড়া মিথ্যা ঘোষণা, জাল জালিয়াতি ও শুল্কফাঁকি রোধে অসাধু আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কাস্টম হাউস। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে ১৭টি লাইসেন্স এবং চূড়ান্ত বাতিল করা হয়েছে তিনটি।

এ বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডিরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের কালিতলা পার্কিংয়ে পণ্যবোঝাই ট্রাক দিনের পর দিন আটকে রেখে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করা হয়। ফলে একটি ট্রাকের বাংলাদেশে আসতে সময় লাগছে ২০-২৫ দিন। মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হয় আমদানিকারকদের। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি বেড়েছে। উন্নয়ন কাজ শেষে হলে রেলপথে বাড়বে বেশি আমদানি।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, করোনার মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও উচ্চ শুল্কহারের পণ্য কম এসেছে। তবে ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়ানোর পক্ষে কাজ চলছে। সক্ষমতা বাড়ালে এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়িয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় সম্ভব।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০