মহসিন আলী, বেনাপোল: দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের কাস্টমস হাউজে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। জাতীয় রাজম্ব বোর্ড (এনবিআর) গত অর্থবছরের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউজের জন্য চার হাজার ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। বিপরীতে চার হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা আদায় হয়। ফলে রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়ায় ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
বাণিজ্যে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বন্দরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সমস্যা, পণ্যের নিরাপত্তা শঙ্কা ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অযৌক্তিক হারে দিন দিন আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ককর বৃদ্ধিতে পাচার কার্যক্রম বেড়ে যাওয়া রাজস্ব সংকটের অন্যতম কারণ হতে পারে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছেন, বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ চলছে। যা সম্পন্ন হলে আগামীতে রাজস্ব আদায় বাড়বে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১৮ লাখ দুই হাজার ২৮৪ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার জাকির হোসেন জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৭৬০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যেখানে আদায় হয়েছিল তিন হাজার ৮০৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি।
অন্যদিকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ১৪৩ কোটি। রাজস্ব বোর্ড বছরের শেষ মুহূর্তে আবার তা কমিয়ে দুই হাজার ৮৫০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে। পরে দুই হাজার ৯৪০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয় ওই বছরে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি ছিল ১৩৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ঘাটতি ৪৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বর্তমান সরকার বন্দর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। যদিও প্রয়োজনের তুলনায় উন্নয়ন অনেক কম হয়েছে। বন্দরে শেডের অভাবে মালামাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। বন্দরের চাহিদা অনুযায়ী উন্নয়ন হলে রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ করা সম্ভব।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যের ওপর মূল্য বৃদ্ধি ও শুল্কহার বৃদ্ধি করায় রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছ। তিনি বলেন, বেনাপোল বন্দরে যেক’টি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিপূরণ না পেয়ে আনেক ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
বেনাপোল বন্দর ডিরেক্টর আমিনুল ইসলাম জানান, বন্দরের নতুন করে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। আমদানি পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বন্দরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলছে। বন্দরের এসব উন্নয়ন সম্পন্ন হলে রাজস্ব আয় বাড়বে।
হাউজের রাজস্ব ঘাটতি ১৮০ কোটি টাকা
