দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বেনাপোল-যশোর সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গতকালের শেয়ার বিজ-এ। জানা যায়, সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বিটুমিন ও খোয়া উঠে গেছে। এর ৩৮ কিলোমিটার অংশের এমনই খারাপ অবস্থা যে, দ্রুত সংস্কার না হলে সড়কের সামান্য সমস্যাতেই দু’দেশের আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ঝিকরগাছা উপজেলার কপোতাক্ষ সেতুর দুই পাশের এলাকায় সড়কটি মোটামুটি ইটের সড়কে পরিণত হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
যদিও আমরা চাই দেশের প্রতিটি সড়কই ঠিকঠাক অবস্থায় থাকুক এবং মানুষজন নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারুক; কিন্তু মানুষের চলাচলের প্রবাহ, বাণিজ্য, পণ্য আদান-প্রদান প্রভৃতি মাথায় রেখে কিছু সড়ককে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়। ওই সড়কগুলো সারা বছরই যেন পুরোপুরি ভালো থাকে, এ আমাদের বিশেষ চাওয়া। বেনাপোল-যশোর সড়কটিও তেমনই একটি। ভারতের সঙ্গে পণ্য আমদানি ও রফতানিতে এটি অন্যতম ভূমিকা রাখে। বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন পণ্যবোঝাই হাজার হাজার ট্রাক প্রবেশ করে ও বেরিয়ে যায়। আর এসব বাহনের বেশিরভাগই সড়কটি ব্যবহার করে। পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাস বা যানবাহন তো আছেই। এ মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার পথ আবার এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। সুতরাং সড়কটির গুরুত্ব বহুমুখী। প্রতিবেদনে প্রকাশিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের ঝিকরগাছা উপজেলার প্রকৌশলীর বক্তব্য থেকে আরও জানা যায়, যেহেতু এটি সওজের সড়ক, তাই আপাতত তারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে সাময়িকভাবে চলাচলের উপযোগী করে রেখেছেন। কিন্তু তিনি নিজেও পিচের ওপর সলিং করার বিষয়টিকে হাস্যকর বলে স্বীকার করেন। জানা গেছে, সড়কটি ঠিক করার ক্ষেত্রে আগে একনেকে প্রকল্প পাস হবে এবং তারপর কাজ শুরু হবে। তত দিনে সড়কটি কী অবস্থায় পৌঁছে, তা সম্ভবত সংশ্লিষ্টরা কেউই ভাবছেন না। কোনো প্রকল্প একনেকে যেতে সময় লাগে এবং তা বাস্তবায়িত হতে যে পরিমাণ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কর্মকাণ্ড গ্রহণ করতে হয়, সেটি বিবেচনায় নিয়ে বলতে হয় দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য এটিকে একনেকে নেওয়াই যায়; কিন্তু আপাতত এটিকে কয়েক বছর চলার উপযোগী করারও উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে সমস্যা তৈরি হলে তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষতিকর প্রভাব ভোগ করতে হবে সংশ্লিষ্টদের, বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের। আর ব্যবসায়ীদের সমস্যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ক্রেতাদের পকেটে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথটিও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই শুধু বেনাপোল-যশোর সড়ক নয়, দেশের যেখানে যেখানে স্থলবন্দর রয়েছে তার সবগুলোকেই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে টেকসই করে মেরামত করা হোক। দেশের বাণিজ্যের স্বার্থেই তা করতে হবে।
Add Comment