শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্ব পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবারের লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক অবস্থানের মধ্যে ইতিবাচক ধারায় ফিরল পুঁজিবাজারগুলো। খবর: এপি।
এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পেলেও তা স্থির হয়নি। তবে বুধবার ক্রুড অয়েলের দাম প্রতি ব্যারেল ৮৬ সেন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ৮১ ডলার ৮৮ সেন্ট হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের অন্যতম মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারসের দাম ৮৫ সেন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ৮৫ ডলার ৮৭ সেন্টে পৌঁছেছে।
গতকাল জার্মানি ডিএএক্স সূচক প্রায় ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ হাজার ৮১৪ দশমিক ১৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। প্যারিসের সিএসি ৪০ সূচক বৃদ্ধি পায় প্রায় শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। এতে তাদের পয়েন্ট হয় ৬ হাজার ৮৯১ দশমিক ৩৮। তবে ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ৩২২ দশমিক ০৫ হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিটের প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ উভয়ই শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস, ফেড নীতি সুদহার বৃদ্ধি করবে। তবে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, নীতি সুদহার কত দিন স্থায়ী হবে?
টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ, এতে পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৬০১ দশমিক ৬৫-তে। কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অব জাপান’ নীতি সুদহার বৃদ্ধির ধারা থেকে সরে আসে। এ কারণে সূচকের উত্থান হয়েছে। তবে সরকারি বন্ডে নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার প্রায় শূন্য শতাংশ রাখার চেষ্টা করেছিল।
এছাড়া ডলারের বিপরীতে জাপানের মুদ্রা ইয়েন আরও দুর্বল হয়েছে। ১৫১ দশমিক ২২ ইয়েনে বিক্রি হয়েছে ডলার। তবে মঙ্গলবার দাম ছিল ১৫১ দশমিক ৬৬ ইয়েন।
ইউরোর দরও ১ দশমিক ০৫৭৫ থেকে কমে ১ দশমিক ০৫৪৮ হয়েছে।
এদিন এশিয়ার হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক প্রায় শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৭ হাজার ১০১ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। সাংহাই কম্পোজিট সূচক শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তাদের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৩ হাজার ০২৩ দশমিক ০৮-এ। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি ও অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক যথাক্রমে ১ ও শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৩০১ দশমিক ৫৬ ও ৬ হাজার ৮৩৮ দশমিক ৩০ পয়েন্টে অবস্থান করে।
এদিকে বুধবার সকাল থেকেই ভারতের প্রধান পুঁজিবাজারগুলোর গ্রাফ নিচের দিকে। বাজার বন্ধের সময়ও মূল বেঞ্চমার্কগুলো ছিল লালে। গতকাল বাজার বন্ধের সময় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স প্রায় শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ বা ২৮৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে হয় ৬৩ হাজার ৫৯১ দশমিক ৩৩। এছাড়া ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটি প্রায় শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ বা ৯০ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট নিম্নমুখী হয়ে ছিল ১৮ হাজার ৯৮৯ দশমিক ১৫-এর ঘরে। নিফটি মিডক্যাপ ১০০ এবং নিফটি স্মলক্যাপ ১০০-এর সূচক প্রায় শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়।
ভারতের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাতগুলোর মধ্যে নিফটি পিএসইউ ব্যাংক, নিফটি ফার্মা, নিফটি রিয়েলিটি, নিফটি মিডিয়া, নিফটি হেলথকেয়ার এবং নিফটি অয়েলগ্যাসের সূচক ঊর্ধ্বগামী হয়েছিল। এই সূচকগুলো যথাক্রমে শূন্য দশমিক ৩২, শূন্য দশমিক ৩৫, ১ দশমিক ৫৫, শূন্য দশমিক ৮৮, শূন্য দশমিক ৪১ এবং শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এদিকে নিফটি ব্যাংক, নিফটি অটো, নিফটি আইটি, নিফটি ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস, নিফটি এফএমসিজি, নিফটি মেটাল, নিফটি কমোডিটিজ, নিফটি পিএসই এবং নিফটি সার্ভিস সেক্টরের সূচক সবচেয়ে বেশি নিম্নগামী হয়। এই সূচকগুলো যথাক্রমে শূন্য দশমিক ৩৪, শূন্য দশমিক ৫১, শূন্য দশমিক ৭৮, শূন্য দশমিক ৩১, শূন্য দশমিক ৩৪, ১ দশমিক ৪৩, শূন্য দশমিক ৮৪, শূন্য দশমিক ৬২ এবং শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ হ্রাস পায়।