নিজস্ব প্রতিবেদক: মাস ও সপ্তাহের শেষদিনে সূচকের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ শেয়ারদর বাড়লেও ডিএসইএক্স সূচক ও ডিএস৩০ সূচক কমেছে। তবে ইতিবাচক ছিল ডিএসই শরিয়াহ সূচক। গতকাল ৫২ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। কমেছে ৩৬ শতাংশের দর। লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বেড়ে ৪০০ কোটিতে পৌঁছেছে। গতকাল লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান হলেও আধঘণ্টার মধ্যে পতন নেমে আসে। এরপরে দুপুর ১টা থেকে শেয়ার কেনার চাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত প্রধান সূচক নেতিবাচক অবস্থানে থেকে যায়। অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ শেয়ারদর বাড়লেও সূচক ও লেনদেন নেতিবাচক অবস্থানে ছিল।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ কমে চার হাজার ৬৮২ দশমিক ৯০ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক তিন দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৭৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস৩০ সূচক তিন দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ কমে এক হাজার ৬২৭ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ২০৩ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৮ কোটি শূন্য সাত লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪০৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৪৭ কোটি ২৯ লাখ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এ দিন ১৩ কোটি ৬৭ লাখ ৬৪ হাজার ১৫২টি শেয়ার এক লাখ ২৫ হাজার ৮৮৬ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫২ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৫টির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪১টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ন্যাশনাল টিউবস। কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ১৩ টাকা ৮০ পয়সা। এরপরে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের ১৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে তিন টাকা ৮০ পয়সা। নর্দান জুটের ১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে ৬১ টাকা ৭০ পয়সা। ব্র্যাক ব্যাংকের ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর কমেছে দুই টাকা ৬০ পয়সা। ভিএফএস থ্রেডের ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে এক টাকা ৯০ পয়সা। এছাড়া বিএটিবিসির ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে ২৬ টাকা ৩০ পয়সা। ভিএফএস থ্রেডের ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, স্টাইল ক্রাফটের আট কোটি ৯২ লাখ টাকা, ওয়াটা কেমিক্যালের ছয় কোটি ২১ লাখ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের সোয়া ছয় কোটি টাকা ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের পাঁচ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে মোজাফফর হোসেন স্পিনিং। প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ও ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের দর ১০ শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবসের দর ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ, সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের দর ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ, সিমটেক্সের দর ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ, এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের দর ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের দর ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, এসইএমএল আইবিবিএল শরীয়াহ ফান্ডের দর ৯ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়েছে।
১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে গ্লোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো। নর্দান জুটের দর সাত দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ৯৫ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ১২ শতাংশ, এসপি সিরামিকসের দর ছয় শতাংশ, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের দর পাঁচ দশমিক ৮৮ শতাংশ, সাভার রিফ্রাক্টরিজের দর পাঁচ দশমিক ৭০ শতাংশ, তোসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের দর পাঁচ দশমিক ৬০ শতাংশ, দুলামিয়া কটনের দর পাঁচ দশমিক ৩৭ শতাংশ, আইডিএলসি ফাইন্যান্সের দর পাঁচ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৩৫ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৪১ শতাংশ কমে আট হাজার ৬৪৬ দশমিক ১১ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৪ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ কমে ১৪ হাজার ২২১ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৬০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩২টির, কমেছে ১০৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২২টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৮৬৫ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৪ কোটি ৭৪ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮২ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে যমুনা ব্যাংক। কোম্পানিটির দুই কোটি ৬৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়। সিলকো ফার্মার দুই কোটি শূন্য এক লাখ টাকা, ডরিন পাওয়ারের এক কোটি ৪৬ লাখ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের এক কোটি ২৮ লাখ টাকা, কপারটেকের ৪৯ লাখ টাকা, এসকে ট্রিমসের ৪৫ লাখ, ভিএফএস থ্রেডের ৪৫ লাখ টাকা, বিএটিবিসির ৩৬ লাখ টাকা, সি পার্ল রিসোর্টের ৩৬ লাখ টাকা, বেক্সিমকোর সাড়ে ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।