Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 3:21 am

বেশিরভাগ শেয়ারের দর ও লেনদেন বাড়লেও সূচকে মিশ্র প্রবণতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ শেয়ারের দর বাড়ার পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে। তবে সূচকে ছিল মিশ্র প্রবণতা। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সামান্য ইতিবাচক হলেও ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ও ডিএস৩০ সূচক নেতিবাচক ছিল। লেনদেনের শুরুতে সূচকের পতন হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে সূচক ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হয়। বেলা ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সূচক গতকালের সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে যায়। দেড়টার পর কিছুটা নেমে গেলেও শেষ পর্যন্ত দুই পয়েন্ট  ইতিবাচক থাকতে পেরেছে। এদিন ডিএসইতে প্রায় ৪৮ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। কমেছে ৩৬ শতাংশের দর। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।      

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দুই দশমিক শূন্য পাঁচ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য চার শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৫১৪ পয়েন্টে অবস্থান করে।

ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা  দশমিক শূন্য আট শতাংশ কমে এক হাজার ১৬ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক চার দশমিক শূন্য কিরণ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ কমে এক হাজার ৫৪৮ দশমিক ১২ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ৬৩২ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩৪৯ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৪ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এদিন ১৩ কোটি ১৮ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০টি শেয়ার এক লাখ ১৫ হাজার ১৫৯ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৯টির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫৮টির দর।

গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে নতুন তালিকাভুক্ত রিংসাইন টেক্সটাইল। প্রথমদিনেই শেয়ারটির দর পাঁচ টাকা বা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানিটির ১৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর খুলনা পাওয়ারের ১৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা নব্বই পয়সা। নর্দান ইন্স্যুরেন্সের দর ১১ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৬০ পয়সা। স্কয়ার ফার্মার ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে ১০ পয়সা। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের আট কোটি ২৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা ৪০ পয়সা। এছাড়া লাফার্জহোলসিমের আট কোটি ২২ লাখ টাকা, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ছয় কোটি ৮৬ লাখ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ছয় কোটি ৭৮ লাখ টাকা, কে অ্যান্ড কিউ’র ছয় কোটি ৪০ লাখ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ছয় কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।    

৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো। দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। কে অ্যান্ড কিউ’র দর আট দশমিক ৬০ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর সাত দশমিক ৮৮ শতাংশ, ইফাদ অটোসের দর সাত দশমিক ৪৬ শতাংশ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ৭৮ শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ৪৩ শতাংশ, এপেক্স ট্যানারির দর ছয় দশমিক ৪৩ শতাংশ, কেডিএস এক্সেসরিজের দর ছয় দশমিক ৩৬ শতাংশ, নাহি এলুমিনিয়াম ক্যাপিটালের দর প্রায় ছয় শতাংশ বেড়েছে।     

এছাড়া ছয় দশমিক ৭৬ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড। সিএনএ টেক্সের দর পাঁচ শতাংশ, ডেল্টা স্পিনার্সের দর চার দশমিক ৬৫ শতাংশ। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের দর চার দশমিক ৫৪ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর চার দশমিক ৫১ শতাংশ, সায়হাম টেক্সটাইলের দর চার দশমিক ৩৮ শতাংশ, তুংহাই নিটিংয়ের দর চার দশমিক ৩৪ শতাংশ, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের দর চার দশমিক ২৫ শতাংশ, এমারাল্ড অয়েলের দর চার শতাংশ ও ডেসকোর দর তিন দশমিক ৯৫ শতাংশ কমেছে।     

অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক সাত দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য আট শতাংশ বেড়ে  আট হাজার ৩৩১ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৭৩৩ দশমিক ১৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসই৫০ সূচক এক পয়েন্ট নেতিবাচক ছিল। গতকাল সর্বমোট ২৩৬ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৯টির, কমেছে ৯০টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির দর।

সিএসইতে এদিন ২৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ১৭৭ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৩ কোটি ৭১ লাখ ৬৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে দুই কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে সায়হাম কটন। কোম্পানিটির ১১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা খুলনা পাওয়ারের ৭৪ লাখ টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সের ৭২ লাখ, লাফার্জহোলসিমের ৫৪ লাখ, এসকে ট্রিমসের সাড়ে ৪৮ লাখ, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের প্রায় ৪০ লাখ, আরএসআরএম স্টিলের ৩৭ লাখ, ফরচুন শুজের ৩৬ লাখ, এসএস স্টিলের ৩৫ লাখ ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।