প্রতিনিধি, রাজশাহী: স্বল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় বরেন্দ্র অঞ্চল-খ্যাত রাজশাহীতে কপি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে খরিপ-২ মৌসুমে ফুলকপি ও বাঁধাকপি আবাদ করে কৃষকরা প্রচুর লাভের মুখ দেখছেন। শীতের শুরুতেই বাজারে কপি সরবরাহ করা গেলে দাম থাকে অনেক বেশি,
যার ফলে বিঘাপ্রতি প্রায় লাখ টাকার লাভ সম্ভব হয়। পবা ও গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন উঁচু জমিতে বর্তমানে কপি চাষ হচ্ছে। চাষিরা কেউ জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ চারা রোপণ করছেন, আবার কেউ পরিচর্যায় ব্যস্ত। চাষিরা বলছেন, কপির আবাদ লাভজনক হলেও এতে খরচ বেশি এবং যত্নের জন্য প্রয়োজন বিশেষ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা। সামান্য ভুল হলেই পুরো আবাদ নষ্ট হতে পারে। তবে সঠিকভাবে আবাদ করতে পারলে লাভ হয় বিপুল।
পবা উপজেলার চাষি ইব্রাহিম আলী জানান, পাঁচ-ছয় বছর ধরে কপি চাষ করছি। বেশ কয়েকবার লাভবান হয়েছি, আবার দুবার লোকসানও হয়েছে। তবে সঠিকভাবে আবাদ করতে পারলে লাভের কোনো তুলনা নেই।” আরেক চাষি আবু সাঈদ বলেন, ২২ কাঠা জমি লিজ নিয়েছি শুধু কপি চাষের জন্য। অভিজ্ঞতা ভালো হওয়ায় গত কয়েক বছরে কোনো লোকসান হয়নি। শীতের শুরুতেই কপি বাজারজাত করতে পারলে দাম বেশি পাওয়া যায়, তাই আমাদের মূল লক্ষ্য থাকে যত দ্রুত সম্ভব কপি বাজারে পৌঁছানো যায়।
গোদাগাড়ী উপজেলার চাষি আফজাল হোসেন বলেন, তিন বছর ধরে কপি চাষ করছি। প্রথম দিকে ঝুঁকি মনে হলেও এখন আমি নিয়মিত কপি আবাদ করি, কারণ লাভটা ভালোই হয়। শীতের শুরুতে বাজারে কপি তোলার পর যদি ভালো দাম পাওয়া যায়, তাহলে খরচ বাদ দিয়েও বেশ ভালো লাভ থাকে। তবে যত্নের কোনো কমতি হলে পুরো আবাদ নষ্ট হওয়ার ভয়ও আছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে ছালমা বলেন, কপি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে, কারণ কৃষকরা এতে ভালো লাভ করছেন। আমরা আশা করছি, এ বছর গত বছরের তুলনায় আরও বেশি জমিতে কপি আবাদ হবে। এছাড়া উঁচু জমিতে কপি চাষের ফলে বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। খরিপ-২ মৌসুমের জন্য উপযোগী বীজ উদ্ভাবিত হওয়ায় কৃষকদের ঝুঁকি অনেকটা কমে গেছে।” তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, যাতে তারা সঠিকভাবে আবাদ করতে পারেন এবং বেশি লাভবান হতে পারেন।”