কালোটাকা সাদাকরণ

বেশি সাড়া ফ্ল্যাট, প্লট, নগদে সাড়া নেই পুঁজিবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কালোটাকা সাদা করার সুযোগের সাড়া মিলছে না। চলতি অর্থবছর ৫ মাসে মাত্র ৬৯২ জন কালোটাকা সাদা করেছেন। যেখানে সরকার কর পেয়েছে ২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বরাবরের মতোই ফ্ল্যাট, প্লট ও জমি কেনা এবং ব্যাংকে গচ্ছিত নগদ টাকা, আমানতের ক্ষেত্রে বেশি কালোটাকা সাদা হয়েছে। তবে তেমন সাড়া নেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে। গত অর্থবছর একই সময়ে কালোটাকা সাদা করার পরিমাণ ছিল প্রায় দ্বিগুণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজেটে কালোটাকা সাদা করার ক্ষেত্রে শর্তযুক্ত ও জরিমানার হার বৃদ্ধির ফলে কাক্সিক্ষত সাড়া মিলছে না। এনবিআর বলছে, জরিমানার পরিমাণ বেশি হওয়ায় অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে অর্থবছরের শেষ সময়ে কালোটাকা সাদা করার পরিমাণ বাড়তে পারে।

এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে কালোটাকা সাদা করেছেন ৬৯২ জন। এর মধ্যে ফ্ল্যাট, প্লট ও জমি কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ৫৫৮ জন কালোটাকা সাদা করেছেন। এছাড়া ব্যাংকে গচ্ছিত নগদ টাকা, আমানত, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করে টাকা সাদা করেছেন ১২৩ জন। পুঁজিবাজারে মাত্র ১১ জন টাকা বিনিয়োগ করে সাদা করেছেন।

সূত্রমতে, বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন ছাড়াই কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। মূলত করোনাকালে অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী ও পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে এ সুযোগ দেয় সরকার। এ বছর দুটি উপায়ে কালোটাকা সাদা হয়েছে। প্রথমত ফ্ল্যাট, জমি বা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা বা নগদ টাকার ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে। দ্বিতীয়ত, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে। ফ্ল্যাট ও জমি কেনার সময় এলাকায় ও আয়তনভেদে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিতে হয়। আর নগদ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা যেকোনো সিকিউরিটিজের ওপর ১০ শতাংশ কর দিয়েও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ আছে।

এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড প্রায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালোটাকা সাদা হয়েছে। যেখানে প্রায় ১২ হাজার

করদাতা কালোটাকা সাদা করেছেন। দেশের ইতিহাসে এক বছরে এত কালোটাকা আগে কখনও সাদা করা হয়নি। শুধু জুন মাসেই এক হাজার ৪৫৫ জন ব্যক্তি ৬১৯ কোটি কালোটাকা সাদা করেন। কালোটাকা বিনিয়োগকারীর মধ্যে ৭ হাজার ৫৫ জন ব্যাংকে রাখা বিভিন্ন আমানত, এফডিআর, সঞ্চয়পত্র বা নগদ টাকার ওপর ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা বৈধ করেন। তারা এক হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার কর সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাদা করেছেন। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে মাত্র ৪০০ কোটি টাকা অর্থ সাদা করা হয়।

অন্যদিকে, চলতি বছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের বিষয়ে সরাসরি কোনো বক্তব্য না থাকলেও ২০২০-২১ অর্থবছরে ঘোষিত সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়। তবে অর্থবিলে নতুন শর্ত যুক্ত করা হয়। শর্ত অনুযায়ী, পুঁজিবাজার, ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র এবং হাতের নগদ টাকা সাদা করলে ২৫ শতাংশ কর দিতে হবে। এর সঙ্গে মোট করের ওপর পাঁচ শতাংশ পেনাল্টি দিতে হবে। তবে কেউ যদি শিল্প-কারখানায় বিনিয়োগ করেন তাহলে তিনি ১০ শতাংশ কর দিয়ে এ সুযোগ নিতে পারবেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০