নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় প্রতি মাসেই বাড়ছে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি সূচক। চলতি বছরের এপ্রিলে সূচক ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশে উঠেছে। ফিরে গেছে মহামারির আগের অবস্থায়। টানা ১১ মাস ধরে দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি ক্রমাগত বাড়ছে। সে সুবাদে করোনা মহামারির ধাক্কায় তলানিতে নেমে যাওয়া অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, করোনা মহামারির ধাক্কায় কমতে কমতে গত মে মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি একেবারে তলানিতে, ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমে আসে। এর পর থেকে তা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে নভেম্বরে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছে। তবে এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক নিচে রয়ে গেছে এই সূচক।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুলাই মাসে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে, তাতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ডিসেম্বর শেষে উদ্যোক্তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যের চেয়ে এখনও ২ দশমিক ৩২ শতাংশ পয়েন্ট কম ঋণ নিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে বিনিয়োগে মন্দা চলছে। এর অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের চিত্রও ছিল হতাশাজনক। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে তা আরও কমতে থাকে। চলতি অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছবে বলে প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের এপ্রিল শেষে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের স্থি?তির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৯ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। ২০২১ সালের এপ্রিলে বেসরকারি খাতের ঋণ ছিল ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০২১ সালের এপ্রিলের চেয়ে ২০২২ সালের এপ্রিলে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি ঋণ পেয়েছেন। ২০২১ সালের জুনে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশি পরিমাণে আমদানি বৃদ্ধি, বিশেষ করে মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি বাড়ার ফলে বেসরকারি খাতের ঋণ বাড়ছে।
