বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

বর্তমানে দেশে বিনিয়োগ রেশিও ২৯ শতাংশের কাছাকাছি এবং সামনের পাঁচ বছরে তা ৩৪ শতাংশ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। গত দুই-তিন বছরে সামগ্রিক বিনিয়োগ রেশিও বেড়েছে সরকারি বিনিয়োগ বেড়ে যাবার কারণে। যদিও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ যতক্ষণ না বাড়বে ততক্ষণ সম্পূর্ণ সুফল পাওয়া যাবে না। আর এ খাতের বিনিয়োগ বেশ কয়েক বছর যাবৎ ২৩ শতাংশের আশেপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। কাজেই এখন বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া জরুরি। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।  হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ভ্যানগার্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের এমডি ও সিইও ওয়াকার এ চৌধুরী এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র ইকনোমিস্ট ড. মাশরুর রিয়াজ।

ওয়াকার এ চৌধুরী বলেন, গত ২০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। গত ২০-২৫ বছর যাবৎ দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল পাঁচ দশমিক পাঁচ থেকে ছয় শতাংশের মতো বর্তমানে তা সাত শতাংশের উপরে। আমাদের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৬০০ ডলারের কাছাকাছি এবং রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের মতো। বলা যায়, এখন শুধু উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষণা দেওয়াই বাকি। তবে আমাদের ডিপোজিট রেট কমায় লেন্ডিং রেট বেড়ে গেছে। ফলে গত দুই বছর ধরে বেসরকারি কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোতে ডিপোজিট ও লেন্ডিংয়ের মধ্যে একটি গড়মিল দেখা দিয়েছে। বেসরকারি কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেগুলো ভালো করছিল সেগুলোর ডিপোজিট রেট পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল এবং সরকারি ব্যাংকগুলোর ডিপোজিট রেট কমেছে কিন্তু তা বেসরকারি ব্যাংগুলোর সমান নয়। এছাড়া সঞ্চয়পত্রে একটি আকর্ষণীয় রিটার্ন দিচ্ছে। সরকারি কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে নিয়ম রয়েছে, বাধ্যতামূলক ২৫ শতাংশ ডিপোজিট রাখতে হবে বেসরকারি কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোতে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তারা ডিপোজিট তুলে এনে রাখছে সরকারি ব্যাংকগুলোতে। যেমন গত সপ্তাহে তিতাস গ্যাস ইউসিবি ব্যাংক থেকে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা তুলে ডিপোজিট রেখেছে সরকারি ব্যাংকে।

মাশরুর রিয়াজ বলেন, দেশে অনেক অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু এর সুফল যাদের পাবার কথা তারা কি পাচ্ছে? এ সুফল যাদের পাবার কথা তাদের কাছে পৌঁছাতে হলে কিছু ইতিবাচক উপায় আছে সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। তাহলে এর সুফল সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। গত কয়েক বছরে অবকাঠামো বিশেষ করে শিল্পায়নের জন্য যে অবকাঠামোর প্রয়োজন সেখানে কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। ২০০৭-০৮ সালে মাত্র কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হত এখন সেখানে আমরা প্রায় ১৪-১৫ হাজার মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতায় চলে এসেছি। তাছাড়া বড় অবকাঠামো বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে।  দেশে যে বিনিয়োগ রেশিও সেটি এখন ২৯ শতাংশের কাছাকাছি এবং সামনের পাঁচ বছরে তা ৩৪ শতাংশ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। গত দুই-তিন বছরে সামগ্রিক বিনিয়োগ রেশিও বেড়েছে সরকারি বিনিয়োগ অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে। যদিও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ যতক্ষণ না বাড়বে ততক্ষণ সম্পূর্ণ সুফল পাওয়া যাবে না। আর এ খাতের বিনিয়োগ বেশ কয়েক বছর যাবৎ ২৩ শতাংশের আশেপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। কাজেই এখন বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া দরকার বলে মনে করি।

 

শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০