নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় নিরাপদ সড়ক দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের কর্তব্যে বাধা ও ভাঙচুরের মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ ছাত্রের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
ঢাকার থানা ও আদালত সূত্র বলছে, আন্দোলনের সময় সংঘাত, ভাঙচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত ৫১টি মামলায় ৯৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ৫২ জন শিক্ষার্থী। গতকাল ঢাকার আদালতে জামিন চেয়ে ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আইনজীবীরা জামিনের পক্ষে শুনানি করেন।
বাড্ডা থানার মামলায় গ্রেফতার ১৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে জামিন পেয়েছেন ১২ জন। আর ভাটারা থানার মামলায় গ্রেফতার আট শিক্ষার্থীর মধ্যে জামিন পেয়েছেন ছয়জন। অন্যদিকে, ধানমন্ডি থানার পৃথক তিন মামলায় গ্রেফতার ৯ শিক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। ধানমন্ডি এলাকায় ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। আদালত সূত্র বলছে, গ্রেফতার বাকি শিক্ষার্থীদের কারও কারও জামিন শুনানি হতে পারে আজ।
তথ্যমতে, বাড্ডার মামলায় জামিন পাওয়া ১২ শিক্ষার্থী হলেন রেদোয়ান আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, এএইচএম খালেদ রেজা, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, আজিজুল হক, জাহিদুল হক ও মো. হাসান।
ভাটারা থানার মামলায় জামিন পেয়েছেন আজিজুল করিম, মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, মেহেদী হাসান, শিহাব শাহরিয়ার ও সাখাওয়াত হোসেন। ধানমন্ডির মামলায় জামিন পাওয়া ৯ শিক্ষার্থী হলেনÑসোহাদ খান, মাসরিকুল আলম, তমাল সামাদ, ওমর সিয়াম, মাহমুদুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, ইকবাল হাসান, মিনহাজ রহমান ও নাইমুর রহমান।
এদিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ শিক্ষার্থী মাহবুব খান রবিন, তোফায়েল ও আশিক; কোতোয়ালি থানার ৩ শিক্ষার্থী মেহেদী, জাহিদুল ও দুলাল; নিউমার্কেট থানার ৩ শিক্ষার্থী আজিজুর, আমিন ও নূর আলম; শাহবাগ থানার ২ শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক ও রিয়াজুল হক উলু হাজী; পল্টন থানার সাইফুল ওয়াদুদ এবং রমনা থানার ৩ শিক্ষার্থী আরমানুল হক, খাইরুল আলম দিপু ও দাইয়ান নাফিজ প্রধান জামিন পেয়েছেন।
শুনানিতে ছাত্রদের আইনজীবীরা আদালতের কাছে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, এসব ছাত্রের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। মামলার এজাহারেও তাদের নাম নেই। সন্দেহজনকভাবে তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার সবাই ছাত্র। আদালত শুনানি নিয়ে ২৫ শিক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর করেন। পরে আরো ১৭ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
আটককৃত শিক্ষার্থীদের স্বজনেরা জানান, জামিন হওয়ায় এখন তারা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে যাচ্ছেন। আদালত সূত্র বলছে, আদালত থেকে ছাত্রদের জামিনের কাগজ কারাগারে পাঠানো হবে। গত ২৯ জুলাই রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হন। এরপর ঘাতক বাসচালকের শাস্তি এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ শিক্ষার্থীর জামিন
