নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছর যারা ‘হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)’-এর সদস্য কোনো এজেন্সির ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে চান, তাদের খরচ পড়বে সাড়ে চার লাখের বেশি।
হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের ‘হজ প্যাকেজ’ ঘোষণা করেন। এবারে ‘সাধারণ প্যাকেজ’ নামে একটি প্যাকেজ রাখা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই প্যাকেজের আওতায় এবার মাথাপিছু সর্বনিম্ন খরচ হবে চার লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা।’
কোরবানির খরচ হাবের এই প্যাকেজের মধ্যে ধরা হয়নি। কোরবানি বাবদ প্রত্যেক হজযাত্রীকে ৪১০ সৌদি রিয়ালের সমপরিমাণ ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা আলাদাভাবে সঙ্গে নিতে হবে।
আর হজ বাবদ সৌদি সরকার অতিরিক্ত কোনো ফি ধরলে তা ‘প্যাকেজ মূল্য’ হিসেবে ধরা হবে এবং সেটি হজযাত্রীকেই পরিশোধ করতে হবে, সেক্ষেত্রে খরচ আরেকটু বাড়বে।
কভিড মহামারিতে দুই বছর বন্ধ রাখার পর এবারে বিদেশিদের হজের সুযোগ দিচ্ছে সৌদি সরকার। তাতে বাংলাদেশ থেকে সুযোগ পাচ্ছেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে হজ হবে।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা চলতি বছর হজের সুযোগ পাচ্ছেন না। যারা যাবেন, তাদের দুই ডোজ কভিড টিকা নেয়া থাকতে হবে। যাওয়ার সময় কভিড নেগেটিভ সনদ রাখার পাশপাশি কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তও জানিয়ে দিয়েছে সৌদি সরকার।
সৌদি আরবে ‘সাধারণ প্যাকেজ’-এর হজযাত্রীদের হারাম শরিফের বাইরের চত্বরের সীমানার এক হাজার থেকে দেড় হাজার মিটার দূরত্বে থাকার ব্যবস্থা করেছে হাব।
হাব সভাপতি জানান, তাদের ‘সাধারণ প্যাকেজ’-এর বাইরেও অন্যান্য এজেন্সি স্পেশাল প্যাকেজ আনতে পারবে। তবে কোনো প্যাকেজই হাব ঘোষিত সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্যের চেয়ে কম হবে না। গত বুধবার সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় সরকারিভাবে দুটি এবং বেসরকারিভাবে হজ পালনের ক্ষেত্রে একটি প্যাকেজ অনুমোদন দেয়া হয়।
অনুমোদিত প্যাকেজে সরকারিভাবে হজে যেতে প্রথম প্যাকেজে খরচ হবে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা, আর দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে চার লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য চার লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকা খরচের কথা বলা হয়েছে।
হাব কেন তার চেয়ে বাড়িয়ে প্যাকেজ ঘোষণা করলÑজানতে চাইলে শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘খরচের দিক থেকে সরকারি ও বেসরকারি হজ প্যাকেজের মাঝামাঝিতে হজ এজেন্সিগুলোতে থাকতে হবে এটাই স্বাভাবিক।’
আর পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩১ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু করা ‘সম্ভব নয়’ বলে জানিয়ে ১০ জুন থেকে ফ্লাইট শুরু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
২০২০ সালে হজ প্যাকেজের অনুমোদন দেয়া হলেও বাংলাদেশ থেকে কেউ সৌদিতে হজ করতে যেতে পারেননি। মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল গত বছর।
প্যাকেজ-১ এ মোট চার লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২ এ তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ-৩ এ তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। আর বেসরকারি প্যাকেজে তিন লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল।
