নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ৪০ কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির এক মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু ও তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের আইনের আওতায় এনে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে দুদককে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন উচ্চ আদালত। গতকাল এ মামলায় এক আসামির জামিন আবেদনের বিরুদ্ধে করা দুদকের রিভিশন আবেদন খারিজ করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আইনজীবীরা জানান, ২০১৫ সালে মামলা হলেও এখনও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত।
পাশাপাশি এ মামলায় রূপসা সার্ভেয়ার কোম্পানির চিফ সার্ভেয়ার শাহজাহান আলীর জামিনও বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
দুদকের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব জানান, দুই বছরেও মামলাটির তদন্ত শেষ না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন আদালত। তা ছাড়া যারা ঋণ অনুমোদন দিয়েছেন তাদের কাউকেই এ মামলায় আসামি করা হয়নি। তাই বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের সব সদস্যকে আইনের আওতায় এনে আদেশ পাওয়ার ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত। আর দুই বছরেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় আসামি শাহজাহান আলীর জামিন বহাল রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, যথাযথ তথ্য প্রমাণ ছাড়াই বেসিক ব্যাংকের শান্তিনগর শাখা থেকে ৪০ কোটি টাকা ঋণ নেন মেসার্স সৈয়দ ট্রেডার্সের ম্যানেজিং পার্টনার সৈয়দ মাহবুবুল গণি। ২০১০ সালের ২ নভেম্বর ঋণ অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পল্টন থানায় মামলা করে দুদক। মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। মামলায় শাহজাহান আলী ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট গ্রেফতার হন। পরে ওই বছরই তিনি বিচারিক আদালত থেকে জামিন পান। জামিন বাতিল চেয়ে ২০১৬ সালে দুদক রিভিশন আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত রুল দেন। এ রুলের ওপর শুনানি নিয়ে আজ তা খারিজ করে আদেশ দেন আদালত।
আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ব্যাংকটির দিলকুশা, গুলশান ও শান্তিনগর শাখা থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়াই জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়াসহ নিয়ম না মেনে ?ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে তখনকার পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ২০১০ সাল থেকে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। প্রায় চার বছর অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালে রাজধানীর তিনটি থানায় ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে কমিশন।
Add Comment