আরিফ হোসেন, বরিশাল : ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বরিশাল নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাটটি। ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন হাজারো যাত্রী কিংবা সাধারণ মানুষ পারাপার হচ্ছেন এ ঘাট দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে আছে এ ঘাটটি। ধসে পড়েছে ঘাটের অর্ধেক অংশ। এর পরও কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই ঘাটটি সংস্কারে। এলাকাবাসীর আক্ষেপ, আর কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হলে সংস্কার করা হবে চরকাউয়া খেয়াঘাটটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিনের বেলায়ই ঘাটটি দিয়ে পারাপারে ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। আর রাতের বেলায় যাত্রী পারাপার আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। ধসে পড়া ঘাটের রডগুলো বেরিয়ে আছে বিপজ্জনকভাবে। এ রডের ফাঁকে পা পড়লে যে কোনো সময় প্রাণহানিও ঘটতে পারে। এসব সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ।
এছাড়া রাতের বেলায় ঘাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকে না। একাধিক ট্রলারচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পারাপার হওয়ার সময় প্রায়ই ক্ষুব্ধ হন যাত্রীরা। ট্রলারে উঠতে-নামতে যারা বেশি ভোগান্তিতে পড়েন, তাদের অধিকাশংই নারী কিংবা শিশু। ঘাটটি দ্রুত সংস্কার করার দাবি করছেন ট্রলার চালকরাও।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে বরগুনা ও বরিশালগামী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো গভীর রাত থেকেই বরিশাল নৌ-বন্দরে আসে। বরিশালের পূর্বাঞ্চল তথা ভোলা, লাহারহাট ও নেহালগঞ্জসহ চরকাউয়া ইউনিয়নের লোকজনের যাতায়াত এ খেয়াঘাট থেকেই।
শীতকালীন নাব্য সংকটে পানি কম থাকায় ঘাটের খেয়াগুলোকে ভিড়তে হচ্ছে নিচের দিকে। এ কারণে ট্রলারে ওঠা-নামা খুবই কষ্টসাধ্য।
ঢাকা থেকে আসা সাব্বির নামের এক যাত্রী জানান, আমি স্টুডেন্ট মানুষ, প্রায়ই চাকরিসংক্রান্ত বিষয়ে ঢাকায় যাতায়াত করি। আমার বাড়ি টুঙ্গিবাড়িয়া। এ ঘাটে প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়ি কখন যে পা ফসকে রডের মধ্যে পড়ে যাই, বলতে পারি না। এটা নতুন করে নির্মাণ করা উচিত।
ভোলার উদ্দেশে খেয়া পারাপার হওয়া এক নারীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে একটি বাচ্চা আছে, আমি মহিলা মানুষ, ট্রলারে ওঠার সময় কোনোরকম যদি এ ফাঁকে পা পড়ে তাহলে কি অবস্থা হবে বোঝেন।
এ বিষয়ে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, এটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তার পরও আমরা দেখি কী করা যায়।
বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব জানান, এটা আমরা ইজারা দিই না। তার পরও যেহেতু ব্যাপারটা জনদুর্ভোগের, সেক্ষেত্রে আমরা সবাই মিলে দেখি কিছু করতে পারি কি না।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফারুক বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবহিত নই। মাসিক সমন্বয় সভা আছে, সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।