শাইরিনা শারমিন: ২০১০ সালে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেছি। দেখতে দেখতে সাত বছর পেরিয়ে গেছে। সেই সময়ের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয় না বললেই চলে। কেবল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে পাই তাদের। অথচ পুরোনো বন্ধুদের স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়ায় প্রায়ই, তাদের সঙ্গে করা খুনসুঁটি মাঝে মাঝে মনে পড়ে। আবারো সেই আড্ডার দিনগুলোতে ফিরে যেতে মন চায়।
তবে চাইলেও আর দিনগুলো ফিরে পাওয়া যাবে না। বন্ধুরা যে যার মতো পড়ালেখা কিংবা চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। সবাই মিলে একসঙ্গে সময় কাটানোর মতো একটি দিন খুঁজে বের করা কঠিন। তবু আমরা কয়েকজন মিলে কোথাও ঘুরে আসার পরিকল্পনা করতে থাকি। হোক তা ঢাকার ভেতরে কিংবা দূরে কোথাও। ফেইসবুক ও মোবাইল ফোনে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে পরিকল্পনা করে ফেলি। নানা পরামর্শ, দিন তারিখের অলিগলি পেরিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি ‘মিলনমেলা’র আয়োজন করি।
স্থান নির্ধারণ করা হয় মিরপুর বেড়িবাঁধ। ঢাকাবাসীর অন্যতম বিনোদনস্পট এ বাঁধ। মিরপুর বাজার রোড হতে দিয়াবাড়ি, চটবাড়ি, বিরুলিয়া হয়ে ধউর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বাঁধ। শুরুতে দশ বারোজন মিলে সেখানে যাওয়ার চিন্তা করি। পরবর্তীতে একে একে আশিজনের একটা বিশাল দল তৈরি হয়ে যায়। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যও নিয়ে এসেছিলেন সেদিন।
সকাল ৯টায় আমরা মিরপুর ১০ গোলচক্করে মিলিত হই। সেখান থেকে রিকশায় রওনা দিই। শুক্রবার সকালে ঢাকার রাস্তায় যানজট তুলনামূলক কম থাকে। ফাঁকা রাস্তায় একসঙ্গে ত্রিশটি রিকশা ছুটে চলে। একটু হিমেল বাতাসও বইছিল সেদিন। সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ করি পথটুকু।
আধাঘণ্টার মধ্যে আমরা বেড়িবাঁধে পৌঁছে যাই। বেড়িবাঁধের রাস্তাটুকু মন জুড়িয়ে দেয়। কাশফুলে ভরে আছে বেড়িবাঁধের চারপাশ। বর্ষা মৌসুমে ঢাকাকে বন্যা হতে রক্ষা করে এ বেড়িবাঁধ। তুরাগ নদীও আমাদের আনন্দিত করে। স্থানীয় এক বড়ভাই জানান, বর্ষাকালে তুরাগ নদী ও এর আশপাশের অঞ্চল দেখলে মনে হবে পদ্মা কিংবা যমুনার পাড়ে দাঁড়িয়ে আছি।
তুরাগ পাড়ে সেরে ফেলি সকালের নাশতাা। পাশাপাশি চলতে থাকে নতুন-পুরনো নানা গল্প। অনেকে নৌকায় চড়েন। নানা আয়োজন, ছবি তোলা, গান, গল্প, খাওয়া-দাওয়া, টিপ্পনী কাটায় অতিক্রান্ত হয়ে যায় স্মৃতিমধুর দিনটি।
Add Comment