নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র ঈদুল ফিতরের আমেজ এখনও পুরো কাটেনি রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও আজ তেমন জমেনি বাজার। সব বাজারেই ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা কম দেখা গেছে। সরবরাহ ও চাহিদা দুই কম। তবে বাজারগুলোতে বেশিরভাগ সবজির দামই কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা। সেইসঙ্গে বেড়েছে সব ধরনের মাংসের দাম।
গতকাল রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারগুলোতে সব দোকান খোলেননি বিক্রেতারা। সেইসঙ্গে ক্রেতার আনাগোনাও স্বাভাবিকের চেয়ে কম। বিক্রেতারা বলছেন, অনেক বিক্রেতাই ঈদের সময় গ্রামের বাড়ি গেছে। তারা এখনও ফেরেনি। সেইসঙ্গে ঈদের বেড়ানো শেষ করে নগরবাসী এখনও পুরোদমে শহরে ফেরেনি বলে ক্রেতার সংখ্যাও কম। এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারের বিক্রেতা জসিম সওদাগর বলেন, অনেকেই দেশের বাড়ি গেছে, তাই কয়েকটি দোকান বন্ধ আছে। তবে তারা কালকের মধ্যেই ফিরে আসবে। আশা করি রবি-সোমবারের মধ্যে বাজার আগের মতো হয়ে যাবে।
এদিকে সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে বাজারগুলোতে বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৫৫-৬০ টাকা, ধনেপাতা ১৫০, কাঁচামরিচ ৮০, পটোল ৫০-৬০, বেগুন ৫০-৬০, গাজর ৫০-৬০, আলু ২৫-৩০, বরবটি ৬০-৬৫, শসা ৬৫ ও টমেটো (দেশি) ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি লাউ ৩৫-৪০ টাকা ও জালিকুমড়া ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা হাবিব মিয়া বলেন, বাজারে ক্রেতা কম, তাই বিক্রিও কম। ঈদের সময় বলে সবজির ক্যারিং খরচ বাড়ছে। সেইসঙ্গে বিক্রি না থাকায় গত কয়েক দিনে আমাদের অনেক সবজি নষ্ট হয়েছে। তাই আজ দাম একটু বেশি।
ঈদের ছুটি শেষে গতকালই প্রথম কারওয়ান বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে গিয়েছিলেন অনেকে। তাদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেল কিছু সবজির দাম বাড়ার কথা। এ বিষয়ে শাহজালাল নামে একজন বলেন, সবজির দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে। আবার সব দোকানপাটও খোলা নয়।
এদিকে সবজির বাজার চড়া হলেও স্বস্তি মিলছে মাছের বাজারে। আগেই মতোই নাগালের মধ্যে আছে সব ধরনের মাছ। প্রতি কেজি রুই ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়, কাতলা ২২০ থেকে ২৫০, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০, প্রতি কেজি বড় সাইজের গলদা চিংড়ি এক হাজার এবং মাঝারি সাইজের চিংড়ি ৮০০ ও ছোট সাইজের চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে মুদিপণ্যের দাম। প্রতি কেজি আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, দেশি পেঁয়াজ ৪৫ আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০, চায়না রসুন ৮০ আর দেশি রসুন ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে বেড়েছে গরুর মাংসসহ সব ধরনের মাংসের দাম। রোজায় গরুর মাংসের কেজি ৪৫০ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ঢাকা সিটি করপোরেশন ও মাংস বিক্রেতাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে। অনেক দোকানই ঘোষিত দামে মাংস বিক্রি করেছিল। তবে রোজা যেতে না যেতেই কেজিতে মাংসের দাম বেড়েছে ৭০ টাকা। বেড়েছে মুরগির দামও। মূলত ঈদের পর বাসাবাড়িতে দাওয়াতের আয়োজন থাকায় মাংসের চাহিদা বাড়ার কারণেই বেড়েছে দাম।
বাজারগুলোতে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকায়। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৭০, কক মুরগি ৩০০, দেশি মুরগি ৪৫০ আর ছাগলের মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলী নামে এক ক্রেতা বলেন, রোজায় মনিটরিংয়ের কারণে দোকানিরা বেশি দাম রাখতে পারেনি, কিন্তু রোজা শেষে বাজারে কোনো ধরনের মনিটরিং নেই। তাই তারা যা খুশি দাম রাখছে।