শিশুর বুদ্ধি বিকাশের জন্য ছোটবেলা থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাকে সৃষ্টিশীল বিভিন্ন কাজে উৎসাহিত করতে হবে। আজকের বুদ্ধিদীপ্ত শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সুতরাং শিশুর বুদ্ধি বিকাশে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, সমাজ, শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
শিশুর বুদ্ধি বিকাশে অন্তরায়
জিনগত বা বংশগত কারণ
মায়ের অসচেতনতা ও স্বাস্থ্যজ্ঞানের অভাব
বিভিন্ন রোগ ও অত্যধিক ওষুধের ব্যবহার
পরিবার, সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতার অভাব
গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি
শিশুকে পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ানো
শিশুকে ভালো কাজে প্রশংসিত না করা
কারণে-অকারণে তিরস্কার বা নিন্দা করা
শিশুর সামনে ঝগড়া ও অশোভন আচরণ শিশুর বুদ্ধির বিকাশে অন্যতম অন্তরায়
যেসব সমস্যা হতে পারে
নানা ধরনের জটিলতা মেধাহীন শিশুর নিত্যসঙ্গী হয়ে থাকে। মেধাহীন শিশুর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। সে লেখাপড়ায় অমনোযোগী হতে পারে। খাবার খেতে অনীহা থাকে। রাগ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। স্কুল-কলেজের ফল ভালো নাও হতে পারে।
গর্ভবতী মায়ের যত্ন
শিশুর বুদ্ধির বিকাশের ৭০ ভাগ মায়ের গর্ভকালীন অবস্থায় শুরু হয়। তাই গর্ভাবস্থায় মাকে ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়ানো উচিত। একই সঙ্গে তার
দরকার পর্যাপ্ত বিশ্রাম, মানসিক ফুর্তি ও হাসিখুশি থাকা।
এক-পাঁচ বছর পর্যন্ত
বিলিয়নের বেশি নিউরন নিয়ে একটি মানবশিশুর জš§ হয়। শিশুর বুদ্ধি বিকাশ অনেকটা মস্তিষ্কের নিউরনের ওপর নির্ভর করে। এ নিউরনের বৃদ্ধি মায়ের পেটে থাকার সময় থেকে প্রথম পাঁচ বছর বয়সে সম্পন্ন হয়। তাই এ সময় শিশুর দরকার বিশেষ যতœ।
পুষ্টিকর খাবার
মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও সতেজ রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে শিশুর মেধার বিকাশ ঘটানো সম্ভব। মেধা নষ্ট করেÑএমন ক্ষতিকর খাবার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, অল্প পরিমাণ মাংস প্রভৃতি খাওয়ানো উচিত।
পর্যাপ্ত ঘুম
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অপর্যাপ্ত ঘুম শিশুর বুদ্ধি বিকাশে বিঘ্নি ঘটায়। তাই শিশুর পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
সবশেষে আরও বলা যায়, ভালো কাজে শিশুকে উৎসাহ দিন। প্রশংসা করুন। শিশুর সামনে ঝগড়া বা অশোভন আচরণ করবেন না। পরিবার ও প্রতিবেশীর অন্য শিশুর সঙ্গে মিশতে দিন। খেলার সুযোগ দিন। শিশুর সামনে সিগারেটসহ কোনো ধরনের নেশা করবেন না। শিশুকে বিভিন্ন জিনিস ও মানুষের সঙ্গে পরিচয় করে দিন। তার পছন্দ-অপছন্দ বোঝার চেষ্টা করুন। দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ দিন। এতে শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়বে। শিশুকে সময় দিন। তার সঙ্গে কথা বলুন ও মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনুন।
রাহাতুল ইসলাম