নিজস্ব প্রতিবেদক: মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অধিকতর অংশগ্রহণ ও বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজন করতে চলেছে। আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’ শীর্ষক এ ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেবেন।
আয়োজন উপলক্ষে গতকাল ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার যৌথভাবে এ আয়োজন করতে যাচ্ছে। সামিটে বাংলাদেশের অর্জন, বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সম্ভাবনা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিটি খাতের অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। দেশের অর্থনীতি এখন একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে; ফলে অনেক বাণিজ্য সুবিধা পাবে না বাংলাদেশ। তখন জিএসপি প্লাস নামে বাণিজ্য সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এক সময় নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতায় বাণিজ্যে এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পিটিএ বা এফটিএর মতো চুক্তি করে বাণিজ্য সুবিধা নিতে হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন চমৎকার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে, প্রায় ১১ কোটি মানুষ ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় এসেছে, বর্তমানে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ। এ লক্ষ্য সামনে রেখে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বাণিজ্য সম্মেলনের সার্বিক দিক তুলে ধরে বলেন, অবকাঠমো, আইটি, আইটিইএস ও ফিনটেক, লেদারগুডস, ফার্মাসিউটিক্যাল, অটোমোটিভ অ্যান্ড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক পণ্য, এগ্রো অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং, জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল, এফএমসিজি অ্যান্ড রিটেইল বিজনেস প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও করণীয় সম্পর্কে বাণিজ্য সম্মেলনে আলোকপাত করা হবে। তিনি বলেন, এ বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩৮টি দেশের মোট ৫৫২টি কোম্পানি ৪৫০টি বিটুবিতে অংশ নেবে, যার মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হবে।
এ ছাড়া ঢাকা চেম্বারের সভাপতি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ ও ইউরোপের অর্থনীতি: নতুন নীতি কাঠামো’, ‘এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ও প্রস্তুতি’, ‘মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা’, ‘এশিয়া-প্যাসিফিক ও বাংলাদেশ: অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’, ‘বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যকার বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা: নতুন দিগন্তের সম্ভাবনা’ এবং ‘বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সহায়ক ঋণ প্রক্রিয়া’ শীর্ষক ৬টি ওয়েবিনার আয়োজন করা হবে। এতে সংশ্লিষ্ট খাতের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ভার্চুয়াল বাণিজ্য সম্মেলনটি বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের কাছে কভিড মহামারিকালীন সময়েও ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আয়োজিতব্য বাণিজ্য সম্মেলনটি সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ; যার মাধ্যমে ৫টি মহাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক উদ্যোক্তাকে বিটুবি অধিবেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এনকেএ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।