নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির ফলে আবহাওয়ায় বৈরী অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা এড়াতে উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উপকূল ছাড়াও পদ্মা, মেঘনাসহ প্রধান নদীগুলো উত্তাল হয়ে উঠেছে। অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোতেও লঞ্চ চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টির ফলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়ে একটি নিম্নচাপ দেশের স্থলভাগে উঠে আসে। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃহস্পতিবার থেকেই ব্যাপক বৃষ্টি চলছে, যা আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম ও মোংলাসহ দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে গতকাল বৈরী আবহাওয়ার কারণে সারা দেশে ছোট আকারের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখতে বলেছে অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমকে জানানো হয়, খারাপ আবহওয়ার কারণে সারা দেশে ৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্যরে সব ধরনের নৌযানের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর উপক‚লীয় এলাকা হাতিয়া, বেতুয়া ও রাঙ্গাবালিতে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা সদরঘাটের বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক সৈয়দ মাহফুজুর রহমান জানান, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ফারহার-৪ নামের একটি লঞ্চ হাতিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমুদ্রবন্দরগুলোয় তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকায় কর্তৃপক্ষ ওই রুটের সব লঞ্চের যাত্রা বাতিল করেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপক‚লীয় এলাকায় কোনো ধরনের লঞ্চ চলবে না বলে জানান তিনি। মাহফুজ বলেন, নৌবন্দরে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত থাকলে ৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্যরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার নিয়ম। সে কারণেই সারা দেশে ছোট লঞ্চ না চালাতে বলা হয়েছে।
এদিকে পদ্মা উত্তাল হয়ে ওঠায় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটের ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান পারাপার বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে দুই ঘাটে কয়েকশ গাড়ি আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শাহ নেওয়াজ খালেদ জানিয়েছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে পদ্মা উত্তাল হতে শুরু করে। বেলা পৌনে ১২টার দিকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট দিয়ে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ডাম্প ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিকাল পর্যন্ত ফেরি দিয়ে কোনো রকমে পারাপার সচল রাখা হয়েছিল, কিন্তু বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বিকাল ৪টার দিকে সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। অবশ্য বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আলীমুজ্জামান জানিয়েছেন, ফেরি চলাচল বন্ধই বলা যায়। ১৭টি ফেরির মধ্যে এখন কে-টাইপের একটি ফেরি চলছে।
এদিকে দিনভর অতিবৃষ্টির কারণে রাজধানী ঢাকার মিরপুর, কাজীপাড়া, ধানমন্ডি, মতিঝিল, মগবাজার, মালিবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। অতিরিক্ত পানির কারণে প্রধান সড়কগুলোতেও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে দেখা গেছে।