নিজস্ব প্রতিবেদক: লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজন বাংলাদেশি নিহত এবং ৯৯ জন আহত হওয়ার খবর দিয়েছে বাংলাদেশ মিশন। বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আবদুল্লাহ আল মামুন গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, নিহতরা হলেন মেহেদি হাসান, মিজানুর রহমান ও রেজাউল। তিনজনই লেবাননে বসবাস করে আসছিলেন। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখন হাসপাতালে আছেন ৮-১০ জনের মতো।
আহতদের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ জন সদস্য রয়েছেন, যারা সেখানে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে নিয়োজিত ছিলেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ জানিয়ে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, নৌবাহিনীর সাতজন এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন, বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।
মঙ্গলবার বিকালে বৈরুত বন্দরের একটি বিস্ফোরক দ্রব্যের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে পুরো লেবানন ও আশেপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু বাড়িঘর। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে (ইউনিফিল) মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীনে লেবাননে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস ‘বিজয়’ তখন বৈরুত বন্দরেই নোঙর করা ছিল। বিস্ফোরণের ধাক্কায় জাহাজেরও ক্ষতি হয়েছে।
লেবানন সরকার জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ধ্বংসস্তূপ থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, আহত হয়েছেন চার হাজারের বেশি মানুষ। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে, ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০১৩ সালে একটি জাহাজ থেকে জব্দ করা দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বন্দরের একটি ওয়্যারহাউসে মজুত করে রাখা হয়েছিল। কোনোভাবে সেখানে আগুন লাগার পর ভয়ঙ্কর ওই বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় সময় ৬টার পরপর ওই বিস্ফোরণে বৈরুত ছাড়াও আশেপাশের অনেক শহর কেঁপে ওঠে। কম্পন অনুভূত হয় ২৪০ কিলোমিটার দূরের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসেও, সেখানকার বাসিন্দারা এ ঘটনাকে ভূমিকম্প বলে মনে করেছিলেন। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড়– গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে, এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি, ভবন উড়ে যেতে দেখা যায়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় বাড়িঘরের জানালার কাচ ও বেলকনি ভেঙেও অনেকে আহত হন। বৈরুত বন্দরের যেখানে ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেই বাংলাদেশ দূতাবাসের অবস্থান। আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভূমিকম্প হলে যেমন ঝাঁকুনি হয়, তেমনটা অনুভূত হয়েছিল আমাদের এখানে। তবে দূতাবাস ভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি।