প্রতিনিধি, বগুড়া: সময় এবার অন্য রকম। দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর, মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসবের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ আতর, টুপি ও জায়নামাজ। প্রতি বছর এ সময় সুগন্ধি আতর, টুপি ও জায়নামাজের দোকানে থাকে উপচেপড়া ভিড়, কিন্তু এবার করোনার কারণে এসব দোকানে নেই বেচাকেনার ভিড়। ফাঁকা ক্রেতাশূন্য এসব দোকান।
আজ (রোববার) বগুড়ার বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, আতর-টুপির দোকানে ক্রেতাদের কোনো ভিড় নেই। তবে ফুটপাতের দোকানগুলোয় কিছু ক্রেতা দেখা গেছে। বগুড়ার বড় মসজিদ গেটের সামনে ঈদের আগে আতর-টুপি কিনতে যে ভিড় দেখা যেত এবার তা নেই, ভিড় নেই বললেই চলে।
কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, আতর ও বিভিন্ন রকমের টুপি সাজানো রয়েছে। দেশি টুপির পাশাপাশি বাহারি নকশার বিদেশি টুপিও রয়েছে। তবে ক্রেতাদের উপস্থিতি একেবারেই কম। নেই কোনো হাঁকডাকও।
আতর দোকানি মামুন বলেন, ‘করোনার কারণে লোকজন বাইরেই বের হয় না, বেচাকেনা কী হবে? প্রতিবছর রোজার শেষ দিনে যে ভিড় থাকে, আজকে তার কিছুই নেই।’
আরেক আতর-টুপির দোকানদার হোসেন বলেন, ‘একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। মানুষের মনে আতঙ্ক। ঈদ হলো খুশির বিষয়। মানুষের মনে যদি খুশিই না থাকে, তাহলে কী কিনবে? তারপরও টুকটাক কিছু বেচা-বিক্রি হচ্ছে।’ হোসেন জানান, চীনা টুপি ১০০ থেকে ২০০ টাকা, পাকিস্তানি টুপি ১৫০ থেকে ৬০০, ভারতীয় টুপি ২০ থেকে ৬০০ এবং দেশে তৈরি টুপি ১০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টুপির ডিজাইন ও আকার অনুযায়ী ভিন্ন রকম দাম।
আতরেরও রয়েছে বিভিন্ন রকম দাম। দোবাইর মেকাত, হারামাইন ও জান্নাতুল ফেরদাউস আতরের চাহিদা বেশি। তবে সৌদি আরবের তৈরি লর্ড আতরের দাম অনেক বেশি। এক শিশি আতরের দাম প্রায় ১২ হাজার টাকা। ১০০ মিলিলিটারের সুলতান এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা, আলফারেজ দুই হাজার, সিলভার এক হাজার ৮০০, ওপেন এক হাজার ৫০০, ইগুবস এক হাজার ৬০০, বস এক হাজার ৫০০ এবং ম্যাডার রোজ ব্র্যান্ডের আতর এক হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করেন দোকানি।
এছাড়া প্রতি শিশি সৌদির রয়্যাল ম্যারেজ ৫০ টাকা ও ওয়ান ম্যান শো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাফসাফা ২০০ টাকা, দুবাইয়ের সুলতান ২২০, ভারতের কোবরা ২৫০, বোম্বে দরবার ৩০০, নূর ৩০০ এবং ইরানি গাউজ আতর ১২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর দেশীয় আতর আলিফ, ম্যাগনেট, লাভ মি, সালমা, সুইটরোজ ও আল নাইম ফিগো আতরের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা শিশি।
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী ঈদের দিন আতর ব্যবহার করা সুন্নত। এ কারণে ঈদে সবাই আতর ব্যবহার করে নামাজ পড়তে যায়। কিন্তু এবার বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বদলে গেছে সব চিরচেনা দৃশ্য।