বোতলজাত সয়াবিনের দাম আরও পাঁচ টাকা বাড়লো  

নাজমুল হুসাইন: সয়াবিন তেলের বাজারে চলছে অস্থিরতা। আড়াই মাসের ব্যবধানে দেশের বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের তেলের দাম বাড়ছে লিটারে ১১ টাকা। গত অক্টোবরে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল ছয় টাকা। আর এবারে লিটারপ্রতি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে পাঁচ টাকা। তবে তা এখনও অনুমোদন না পেলেও গতকাল বুধবার থেকে বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন।

জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম দিকেই ট্যারিফ কমিশনকে সয়াবিনের দাম বাড়ানোর বিষয়ে জানায় ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলকে দেওয়া ওই চিঠিতে বোতলজাত তেলের নতুন দাম ১০৫ টাকা নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।

তবে এখনও সেই প্রস্তাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায়নি। কিন্তু বাজারে গতকাল পরিবেশক ও বিক্রেতাদের কাছে মৌখিকভাবে বোতলজাত তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় কোম্পানিগুলো। দু-একটি কোম্পানি ইতোমধ্যে বাড়তি দামে ইনভয়েস করা শুরু করেছে। এতে বাজারে তেলের দাম এরই মধ্যে বেড়েছে। আর যেসব কোম্পানি এখনও দাম বাড়ায়নি তাদের পরিবেশকরা শিগগির নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন।

গত অক্টোবরে দেশে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য ছিল ৯৪ টাকা, যা ওই মাসে ছয় টাকা বাড়িয়ে ১০০ টাকা হয়েছিল। আর নতুন দামে প্রতি লিটার তেলের দাম ১০৫ টাকা। অর্থাৎ আড়াই মাসে দুই দফায় প্রতি লিটার তেলের দাম বাড়লো ১১ টাকা।

গতকাল কারওয়ান বাজারে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের পরিবেশকের আমির অ্যান্ড ব্রাদাসের্র স্বত্বাধিকারী আমির হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবারে তেলের ইনভয়েসে রূপচাঁদা তেলের দাম প্রতি লিটারে পাঁচ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে। ওই তেল আগামীকাল এসে পৌঁছাবে। নতুন দামে পরিবেশক পর্যায়ে প্রতি লিটার রূপচাঁদা ৯৮ টাকা থেকে বেড়ে ১০৩ টাকা করা হয়েছে। ওই তেল এলে বাড়তি দামে বিক্রি হবে।’

অন্যদিকে বেগম বাজারে গিয়ে খোঁজ নিলে সেখানে সিটি গ্রুপের ডিস্ট্রিবিউশন সেলের আনিস হোসেন জানান, ‘কোম্পানিগুলো তাদের বাড়তি দামের কথা ডিস্ট্রিবিউশন সেলকে জানিয়েছে। তবে তা কার্যকর করার নির্দেশ এখনও আসেনি। আগামীকাল থেকে নতুন দর কার্যকর হতে পারে।’

এদিকে দাম বৃদ্ধির ঘোষণায় এসব বাজারে বোতলজাত তেলের পাইকারি বিক্রি কমে গেছে। অনেক পরিবেশক তেলের দাম বৃদ্ধির আগে তেল বিক্রি করছেন না। আর খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে অধিকাংশ দোকানে বাড়তি দামে তেল বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা রাজ্জাক ট্রেডার্সের রাজ্জাক

ভোক্তারা। দুই-তিন মাসের ব্যবধানে ১১ টাকা তেলের দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়বে বিভিন্ন পণ্যের দরে এমন মনে করছেন অনেকে। তেলের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা যাচাই করা দরকার বলে মনে করছেন তারা।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘যেহেতু পণ্যটি আমদানিনির্ভর, তাই বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে দেশেও বাড়বে। তবে আমরা এখনও আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা করছি। যৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো না হলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’