এনামুল হক নাবিদ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ইছামতী খালের ওপর নতুন করে সুইসগেট নির্মিত হওয়ায় বন্ধ ছিল পুরোনো সুইসগেটটি। ফলে ইছামতী খালের পানি বন্ধ থাকায় এ বছর বোরো আবাদে দেখা দিয়েছিল অনিশ্চয়তা। বোরো আবাদে পানি সংকট নিরসনে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গত শনিবার খুলে দিয়েছে বন্ধ থাকা সুইসগেটের দরজা। ফলে এই ইছামতী খালের পানির ওপর নির্ভর করা ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদে কেটেছে অনিশ্চয়তা। সমস্যা সমাধানে পাউবো ব্যবস্থা না নিলে এবারের বোরো মৌসুমের আবাদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়তেন বলে মনে করেন এ অঞ্চলের পাঁচ হাজারেরও অধিক কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে বোরো চাষের আওতায় রয়েছে সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমি। এর মধ্যে চাতরী, আনোয়ারা সদর, বারখাইন, পরৈকোড়া, হাইলধর ও বরুমচড়া ইউনিয়নের বোরো ও রবিশস্য চাষিরা এ ইছামতী খালের পানির ওপর নির্ভরশীল। এই খালে শঙ্খ নদীর লবণপানির প্রবেশ বন্ধ করতে এক বছর আগে বরুমচড়া ভরাশঙ্খ খালের মুখে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম ‘এলিভেটর রাবার ড্রাম’ নির্মাণ করা হয়। ফসল উৎপাদনে বুদ্ধিমত্তার ভূমিকার কথা
থাকলেও এ এলিভেটর রাবার ড্যামের ক্ষেত্রে কার্যত কোনো সুফল আনেনি।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিকলবাহা খালের নোয়া রাস্তা-কোদলা ইছামতী খালের মুখে দেয়া হয় বাঁধ এবং নির্মিত হচ্ছে সুইসগেট। নতুন সøুইসগেটের নির্মাণকাজ চললেও পুরোনো সুইসগেট দিয়ে জোয়ার-ভাটার পানি ওঠানামা করে। এর ফলে ছয় ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার কৃষক আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ও রবিশস্যের চাষ করে থাকে।
হাইলধর, চাতরী, শোলকাটা, বোয়ালগাঁও, খীলপাড়া, ধানপুরা, শিলাইগড়া, ঝিওরি, বরুমচড়া, তৈলারদ্বীপসহ এ অঞ্চলের রবিশস্য ও বোরো চাষের চাহিদা অনুপাতে সেচের পানি না পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে বোরো চাষে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা কৃষি বিভাগের সিদ্ধান্তে সেই সংকট এখন কেটে উঠেছে।
আনোয়ারা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী জানান, উপজেলার পাঁচ হাজারেরও অধিক কৃষকের বোরো চাষ ইছামতী খালের পানির ওপর নির্ভরশীল। গত শনিবার পুরোনো সুইসগেটটি খুলে দেয়া হয়েছে। বিডিএস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামীকাল এলিভেটর ড্যামের গেটগুলোও খুলে দেয়া হবে। এখন বোরো আবাদে সেচ নিয়ে আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হয়। তারা যখন যেভাবে বলে আমরা সেভাবে করি। তারা যখন বলছে গেট খুলে দিতে, তখন আমরা খুলে দিয়েছি।