Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 9:06 pm

বোল্টনের নতুন বইয়ে ঝড়, নির্বাচনে চীনের ‘সাহায্য চেয়েছেন’ ট্রাম্প

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীনের বিরুদ্ধে বরাবরই নানা অভিযোগ ও হুমকি ধমকি দিলেও গোপনে দেশটির কাছে সহায়তা প্রার্থনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যাতে বিজয়ী হতে পারেন, সেজন্য চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সমর্থন চেয়েছেন ট্রাম্প। এসব বিস্ফোরক দাবি করা হয়েছে ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা জন বোল্টনের নতুন বইয়ে।

‘দ্য রুম হোয়ার ইট হ্যাপেন্ড’ নামের বইটি আগামী ২৩ জুন বাজারে পাওয়া যাবে। তবে এরইমধ্যে বইটি বাজারজাত বা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ নিয়ে মামলা করেছে তারা। আর বোল্টনের দাবি অস্বীকার করে ট্রাম্প বুধবার ওয়ালস্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, ‘বোল্টন একজন মিথ্যুক। হোয়াইট হাউসে সবাই তাকে ঘৃণা করে।’ খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

দীর্ঘদিনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক ঝানু ব্যক্তিত্ব জন বোল্টন ছিলেন ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাকে নিয়োগ দেন ট্রাম্প এবং বিভিন্ন বিষয়ে মতভেদের কারণে গত বছর সেপ্টেম্বরে তাকে বরখাস্ত করেন।

হোয়াইট হাউসে দায়িত্ব পালনের সময়কার বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে লেখা নতুন বইয়ে বোল্টন দাবি করেন, গত বছরের জুনে ওসাকা শহরে জি২০ সম্মেলনের সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে শি যুক্তরাষ্ট্রে থাকা চীনের সমালোচকদের নিয়ে ট্রাম্পের কাছে নালিশ করেন। ট্রাম্পও বৈঠকের এক পর্যায়ে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য জিনপিংয়ের সাহায্য চান।

বইতে বোল্টন লিখেছেন, ‘ট্রাম্প আশ্চর্যজনকভাবে আলোচনাকে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে টেনে নেন এবং তিনি যাতে নির্বাচনে জেতেন, সেটি নিশ্চিতে জিনপিংয়ের সাহায্য কামনা করেন। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও কৃষিপণ্য বিশেষ করে গম, সয়াবিন ইত্যাদি আরও বেশি কেনার অনুরোধ করেন। যাতে নির্বাচনের আগমুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সচল থাকে।’

এছাড়া চীনের উইঘুর মুসলমানের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা করেন ট্রাম্প এবং জিনপিং। বৈঠকে জিনপিং নিজেদের নির্দোষ দাবি করে উইঘুর মুসলিমদের জন্য ক্যাম্প বানানোর বিষয়টি তুলে ধরেন এবং তাতে সায় দেন ট্রাম্প।

বোল্টনের ৫৭৭ পৃষ্ঠার বইটি আগামী ২৩ জুন বাজারে আসার কথা রয়েছে। এরইমধ্যে তা বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তা আটকানোর চেষ্টায় রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বইটির বিক্রি আটকাতে গত বুধবার রাতে এক বিচারকের কাছে জরুরি আদেশ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। এরই মধ্যে মামলা করেছে ট্রাম্প সরকার। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, বইটিতে অনেক ক্লাসিফায়েড বা অফিসিয়াল সিক্রেট তথ্য রয়েছে। এসব প্রকাশ হওয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে শুক্রবার।

সব মিলে এটাকে দেখা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি তার শীর্ষ উপদেষ্টাদের একজনের তরফ থেকে একটি বড় আঘাত হিসেবে। গত বছর ডেমোক্রেটিক দল নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করে, তার চেয়েও বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে বল্টনের এই অভিযোগকে।