কামরুল হাসান চৌধূরী: একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন বুলবুল আহমেদ। শুক্রবার ছুটির দিনে সপরিবারে ডানা পার্কে বেড়াতে এসেছেন। তিনি বলেন, মেয়ের ইচ্ছা এ পার্কের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটা শিখবে। কারণ শহরে সাঁতার কাটা কিংবা গোসলের জন্য ভালো কোনো পুকুর নেই। পানিতে ময়লা-আবর্জনার কারণে শিশুদের সাঁতার শেখাতে পারিনি। এখানে তাকে সাঁতার কাটা শেখানোর চেষ্টা করছি। খুবই ভালো লাগছে পরিবেশটি।
বিনোদনপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ডানা পার্ক। প্রতিদিনই এখানে বেড়াতে আসেন অনেক দর্শনার্থী। নওগাঁয় পার্কটি গড়ে তুলেছেন মাসুদ রানা। নওগাঁ পৌরসভার ভবানীপুরে প্রায় ১০ বিঘাজুড়ে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। রানা বলেন, ‘মেয়ের নামে পার্কের নাম রেখেছি। মানুষের বিনোদনের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ডানা পার্কের সৃষ্টি। ভালো সাড়া পেয়েছি।’
নওগাঁয় রয়েছে ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, হলুদবিহার, কুশুম্বা মসজিদ, দেবরদিঘি, শালবন, রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি, নওগাঁ জেলা পরিষদ পার্ক, জননেতা আব্দুল জলিল শিশু পার্ক প্রভৃতি। পাশাপাশি আনন্দ বিনোদনের লক্ষ্যে ২০১৪ সালে ডানা পার্কের কার্যক্রম শুরু হয়।
পার্কটিতে রয়েছে দুটি সুইমিংপুল, কমিউনিটি সেন্টার, পিকনিক কর্নার, শিশুদের জন্য দোলনা, মই, বিভিন্ন রাইডস। এখানে একটি পুকুর আছে। পুকুরের পানিতে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন দর্শনার্থী। ভাস্কর্যের মধ্যে হাতি, হরিণ, বাঘ, ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, জিরাফ, বক, পরী ও জলপরী রয়েছে। দেয়াললিখনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। খাবারের জন্য আছে রেস্টুরেন্ট। দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের থাকার জন্য কটেজ ও বাংলো তৈরি হচ্ছে।
ডানা পার্কের প্রধান আকর্ষণ সুইমিংপুল। এখানে ছোটদের সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সব বয়সী মানুষের জলকেলিতে মেতে ওঠার সুযোগ রয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে বগুড়ার সান্তাহারে বাবার বাড়িতে এসেছেন ইসরাত জাহান ইতি। তিনি বলেন, শুনেছি এখানে একটি সুন্দর পার্ক আছে। এজন্য স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে দেখতে এসেছি। স্বল্প জায়গায় খুব সুন্দরভাবে বিনোদনকেন্দ্রটি সাজানো হয়েছে। বেড়াতে আসা ফরিদুল ইসলাম বলেন, পার্কের ভেতরের পরিবেশ অসাধারণ। সুন্দর একটি জায়গা এটি। স্থানীয় রাজু আহমেদ বলেন, এখানকার পরিবেশ খুব সুন্দর।
ছুটির দিনগুলোয় প্রচুর মানুষের সমাগম হয় ডানা পার্কে। তবে প্রতিদিনই নওগাঁসহ এর আশেপাশের জেলা থেকে বিনোদনপ্রেমীরা এখানে আসেন। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ মানুষ আসেন। শুক্রবার এ সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে যায়।
পার্কটিতে প্রবেশমূল্য ২০ টাকা। প্রতিটি রাইডস ১০ থেকে ২০ টাকা। সুইমিংপুল ৫০ টাকা। পার্কটি অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। এর পাশে কয়েকটি খেলনা ও বাহারি দোকান গড়ে উঠেছে।
মাসুদ রানা জানান, তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর আরেকটি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।
নওগাঁ
Add Comment